‘চিকিৎসা, নাকি ষড়যন্ত্র করতে সিঙ্গাপুরে গেছেন বিএনপি নেতারা’
- আপডেট সময় : ০৭:৪৮:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৩
- / ৩৮৪ বার পড়া হয়েছে
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপির তিন নেতা সিঙ্গাপুর গেছেন। পত্রপত্রিকায় লেখা হয়েছে, তারা (বিএনপি নেতারা) কি আদৌও চিকিৎসা নিতে গেলেন, নাকি আবার কোনো ষড়যন্ত্র করতে একসঙ্গে সিঙ্গাপুর গেলেন, এটি অনেকের প্রশ্ন।
রোববার (২৭ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনাসভায় তিনি একথা বলেন। আইভি রহমানের ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনাসভার আয়োজন করে ‘আইভি রহমান পরিষদ।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বর্তমানে সস্ত্রীক সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন। তাদের আগে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর গেছেন দলের আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে মোশতাক এবং জিয়া। আর ২১ আগস্টের হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তারেক রহমান। তারা আসলে হত্যার রাজনীতিটাই করে। হত্যার রাজনীতির মাধ্যমেই জিয়াউর রহমানের উত্থান এবং ক্ষমতায় টিকে থাকাটাও হত্যার রাজনীতির মাধ্যমে অব্যাহত রেখেছে। তার (জিয়াউর রহমান) বিরুদ্ধে যখনই সেনাবাহিনীতে ক্যুর প্রচেষ্টা হয়েছে, তখনই নির্বিচারে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা ও সৈনিকদের হত্যা করা হয়েছে।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির ঘরের মধ্যে এখন অন্তর্জ্বালা শুরু হয়েছে। পত্রিকায় দেখলাম, চট্টগ্রামে ছাত্রদল বিএনপি অফিসে তালা লাগিয়ে দিয়েছে। কখন যে নয়াপল্টনের অফিসে যুবদল তালা লাগিয়ে দেয়, সেটি দেখার বিষয়। তাদের (বিএনপি) ঘরের মধ্যে এখন অন্তর্জ্বালা শুরু হয়েছে। নইলে ছাত্রদল বিএনপি অফিসে তালা লাগানোর কথা না। এই অন্তর্জ্বালা শুরু হওয়ার কারণ হচ্ছে, বিদেশিদের কাছে বারবার ধরনা দিয়ে কোনো লাভ হয়নি। বিদেশিরা তাদের দাবি-দাওয়া, তথাকথিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নিরপেক্ষ সরকার এগুলোর প্রতি কোনো সমর্থন জানায়নি। বিদেশিরা শুধু একটি সুন্দর নির্বাচন দেখতে চায় বাংলাদেশে। আমরাও (আওয়ামী লীগ) একটি সুন্দর নির্বাচন করতে চাই।
বিএনপির নির্বাচন বর্জন করার অধিকার আছে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, নির্বাচন প্রতিহত করার চেষ্টা যদি কেউ করে, তাহলে দেশের মানুষ কঠোরহস্তে সেটি প্রতিহত করবে। এটি ২০১৪ সাল নয়, এটি ২০২৩ সাল। এখন ২০১৩-১৪ সালের পুনর্রাবৃত্তি করবেন, সেটি এই দেশের মানুষ করতে দেবে না।
আইভি রহমানের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, আইভি রহমান একজন কর্মীবৎসল নেত্রী ছিলেন। তিনি কর্মীদের সঙ্গে উঠতেন, চলতেন, বসতেন। এমন কোনো মিটিং নেই, যেখানে তিনি থাকতেন না। তিনি শৌখিন ছিলেন। যত্নসহকারে স্বামীর খোঁজখবর রাখতেন।
২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় বঙ্গবন্ধুর খুনিদেরও যুক্ত করা হয়েছিল অভিযোগ করে তিনি বলেন, এই গ্রেনেড হামলা পরিচালনা করা হবে, সেজন্য ফারুক ও রশিদ তখন ঢাকায় এসেছিল। বঙ্গবন্ধুর খুনিদেরও এই হামলায় যুক্ত করা হয়েছিল। যেই শুনেছে, শেখ হাসিনা মৃত্যুবরণ করেনি, তারপর তারা চলে গেছে। এই হামলার পর হাওয়া ভবনের প্রথম প্রশ্ন ছিল— শেখ হাসিনা বেঁচে আছে? যখন শুনেছে উনি (শেখ হাসিনা) বেঁচে আছেন, তারা হতাশায় নিমজ্জিত হয়। তাদের উদ্দেশ্য ছিল শেখ হাসিনাকে হত্যা করা।
জিয়াউর রহমানকে তার লোকেরা হত্যা করেছিল মন্তব্য করে হাছান মাহমুদ বলেন, খালেদা জিয়া সোয়া দুই দফায় ১০ বছর ক্ষমতায় ছিলেন, কিন্তু জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডের বিচার করেনি। কারণ কী? কেঁচো খুঁড়তে সাপ বের হবে, সেজন্য জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডের বিচার করেনি। খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়ার নেতৃত্বে আজকের বিএনপিও সেই হত্যার রাজনীতি থেকে বের হয়ে আসতে পারেনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও আইভি রহমান পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক আ আ স ম আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল।