ঢাকা ১২:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

তাড়াশে দীর্ঘ দিনেও পাকাকরণ হয়নি যাতায়াতের রাস্তা : জনগনের ভোগান্তী চরমে

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৩:০০:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ জুলাই ২০২৩
  • / ৩৭৪ বার পড়া হয়েছে

রফিকুল ইসলাম, তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি:

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার সগুনা ইউনিয়নের হেদারখাল-কুন্দইল তিন কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তা দিয়ে প্রায় ২০ হাজার মানুষ যাতায়াত করে থাকে । কিন্তু সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ফলে দূর্ভোগ পোহাতে জনগণকে। কাঁদা মাড়িয়ে চলতে হয় এলাকাবাসীকে। এদিকে বর্ষা মৌসুমে এই রাস্তার পার্শ্ব খাল দিয়ে নৌকায় যাতায়াত করতে হয় তাদের। এ কারণে চার গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রতি নিয়ত।
তাড়াশ উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয় জানিয়েছেন, রাস্তাটির প্রকল্প দেওয়া আছে। প্রকল্প পাস হলেই রাস্তার কাজ শুরু হবে।

স্থানীয়রা জানান, হেদারখাল হতে কুন্দইল পর্যন্ত তিন কিলোমিটার রাস্তায় মাঝে মধ্যে মাটির কাজ হয়। অার এ অবস্থায় দীর্ঘ পার হলেও রাস্তাটি পাকা করা হয়নি।
স্থানীয় জন প্রতিনিধিরা বিভিন্ন সময একের পর এক প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু উন্নয়নের কোনো ছোঁয়া লাগেনি ওই রাস্তায় । তিন কিলোমিটার কাঁচা রাস্তাটি পাকা না করায় বর্তমানে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। এ সড়ক দিয়ে সান্দুরীয়া, ধাপতেতুলিয়া, প্রতিরামপুর ও কুন্দইল গ্রামের হাজারো মানুষকে প্রতিদিন কাঁদা ভেঙে যাতায়াত করতে হয়।

বিশেষ করে বর্ষা মৌমুমে রাস্তাটি কর্দমাক্ত হয়ে যায়। এ কারণে কোনো ভ্যান, সাইকেল, মোটরসাইকেল দূরের কথা, মানুষ হেঁটেও চলতে পারে না। এতে বেশি সমস্যায় পড়তে হয় কৃষকদের। কারণ তাদের উৎপাদিত কৃষি পণ্য বাজার জাত করতে হিমশিম খেতে হয। পাশাপাশি ওই রাস্তা দিয়ে অসুস্থ্য রোগীদের চিকিৎসার জন্য উপজেলা সদরে নিতে ভোগান্তি পোহাতে হয় স্বজনদের।
এ ছাড়াও ওই রাস্তা দিয়ে ওই চার গ্রামের হাজারো মানুষ উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করে থাকে। বিকল্প কোনো রাস্তা না থাকায় বছরের বেশির ভাগ সময় এলাকাবাসী বাধ্য হয়েই কাঁদা পানি মাড়িয়ে চলাচল করে থাকেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বৃষ্টিতে রাস্তাটি কর্দমাক্ত হয়ে পড়েছে। রাস্তার মাঝখানে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য ছোট-বড় গর্ত। তাতে জমেছে বৃষ্টির পানি। চলাচল করতে পারছে না যানবাহন। হেঁটে চলাচল করাও কষ্টসাধ্য। আর ওই রাস্তা দিয়েই কোমলমতি শিক্ষার্থীরা হেঁটে চলছে স্কুল – কলেজে।

রাস্তাটি পাকা হলে একদিকে যেমন গ্রামের স্কুলগামী ছাত্রছাত্রী ও লোকজনের যাতায়াতে ভোগান্তি কমবে, অন্যদিকে এলাকার কৃষকেরা ধান, পাট, শাক-সবজি কম খরচে বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে পারবেন।

ধাপতেলিয়া গ্রামের কৃষক রইচ উদ্দিন, ছাবেদ প্রামাণিকসহ একাধিক বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চারটি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা এটি। বর্ষার দিনে এই রাস্তা ডুবে যায়। তখন নৌকায় যাতায়াত করতে হয়। শুষ্ক মৌসুমে একেবারেই চলাচল করা যায় না। অনেক সময় পা পিছলে বয়স্ক মানুষ পড়ে গুরুতর আহত হন। আর যাতায়াতে মোটরসাইকেল, ভ্যানগাড়ি, সাইকেল কাদার মধ্যে দেবে গিয়ে উল্টে যায়। এসব দেখার যেন কেউ নেই।

সগুনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. জুলফিকার আলী ভূট্ট বলেন, রাস্তাটি কাঁচা থাকায় এলাকার মানুষ কষ্ট করে চলাচল করছে। তবে রাস্তাটির প্রকল্প দেওয়া আছে। প্রকল্প পাস হয়ে এলে রাস্তার কাজ দ্রুত শুরু হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের তাড়াশ উপজেলা প্রকৌশলী মো. ফজলুল হক বলেন, ওই রাস্তার দেড় কিলোমিটার পাকাকরণের জন্য আবেদন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর তা পাঠানো হয়েছে। সেটি পাস হয়ে এলেই দ্রুত রাস্তাটি পাকাকরণের কাজ করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

তাড়াশে দীর্ঘ দিনেও পাকাকরণ হয়নি যাতায়াতের রাস্তা : জনগনের ভোগান্তী চরমে

আপডেট সময় : ০৩:০০:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ জুলাই ২০২৩

রফিকুল ইসলাম, তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি:

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার সগুনা ইউনিয়নের হেদারখাল-কুন্দইল তিন কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তা দিয়ে প্রায় ২০ হাজার মানুষ যাতায়াত করে থাকে । কিন্তু সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ফলে দূর্ভোগ পোহাতে জনগণকে। কাঁদা মাড়িয়ে চলতে হয় এলাকাবাসীকে। এদিকে বর্ষা মৌসুমে এই রাস্তার পার্শ্ব খাল দিয়ে নৌকায় যাতায়াত করতে হয় তাদের। এ কারণে চার গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রতি নিয়ত।
তাড়াশ উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয় জানিয়েছেন, রাস্তাটির প্রকল্প দেওয়া আছে। প্রকল্প পাস হলেই রাস্তার কাজ শুরু হবে।

স্থানীয়রা জানান, হেদারখাল হতে কুন্দইল পর্যন্ত তিন কিলোমিটার রাস্তায় মাঝে মধ্যে মাটির কাজ হয়। অার এ অবস্থায় দীর্ঘ পার হলেও রাস্তাটি পাকা করা হয়নি।
স্থানীয় জন প্রতিনিধিরা বিভিন্ন সময একের পর এক প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু উন্নয়নের কোনো ছোঁয়া লাগেনি ওই রাস্তায় । তিন কিলোমিটার কাঁচা রাস্তাটি পাকা না করায় বর্তমানে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। এ সড়ক দিয়ে সান্দুরীয়া, ধাপতেতুলিয়া, প্রতিরামপুর ও কুন্দইল গ্রামের হাজারো মানুষকে প্রতিদিন কাঁদা ভেঙে যাতায়াত করতে হয়।

বিশেষ করে বর্ষা মৌমুমে রাস্তাটি কর্দমাক্ত হয়ে যায়। এ কারণে কোনো ভ্যান, সাইকেল, মোটরসাইকেল দূরের কথা, মানুষ হেঁটেও চলতে পারে না। এতে বেশি সমস্যায় পড়তে হয় কৃষকদের। কারণ তাদের উৎপাদিত কৃষি পণ্য বাজার জাত করতে হিমশিম খেতে হয। পাশাপাশি ওই রাস্তা দিয়ে অসুস্থ্য রোগীদের চিকিৎসার জন্য উপজেলা সদরে নিতে ভোগান্তি পোহাতে হয় স্বজনদের।
এ ছাড়াও ওই রাস্তা দিয়ে ওই চার গ্রামের হাজারো মানুষ উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করে থাকে। বিকল্প কোনো রাস্তা না থাকায় বছরের বেশির ভাগ সময় এলাকাবাসী বাধ্য হয়েই কাঁদা পানি মাড়িয়ে চলাচল করে থাকেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বৃষ্টিতে রাস্তাটি কর্দমাক্ত হয়ে পড়েছে। রাস্তার মাঝখানে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য ছোট-বড় গর্ত। তাতে জমেছে বৃষ্টির পানি। চলাচল করতে পারছে না যানবাহন। হেঁটে চলাচল করাও কষ্টসাধ্য। আর ওই রাস্তা দিয়েই কোমলমতি শিক্ষার্থীরা হেঁটে চলছে স্কুল – কলেজে।

রাস্তাটি পাকা হলে একদিকে যেমন গ্রামের স্কুলগামী ছাত্রছাত্রী ও লোকজনের যাতায়াতে ভোগান্তি কমবে, অন্যদিকে এলাকার কৃষকেরা ধান, পাট, শাক-সবজি কম খরচে বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে পারবেন।

ধাপতেলিয়া গ্রামের কৃষক রইচ উদ্দিন, ছাবেদ প্রামাণিকসহ একাধিক বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চারটি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা এটি। বর্ষার দিনে এই রাস্তা ডুবে যায়। তখন নৌকায় যাতায়াত করতে হয়। শুষ্ক মৌসুমে একেবারেই চলাচল করা যায় না। অনেক সময় পা পিছলে বয়স্ক মানুষ পড়ে গুরুতর আহত হন। আর যাতায়াতে মোটরসাইকেল, ভ্যানগাড়ি, সাইকেল কাদার মধ্যে দেবে গিয়ে উল্টে যায়। এসব দেখার যেন কেউ নেই।

সগুনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. জুলফিকার আলী ভূট্ট বলেন, রাস্তাটি কাঁচা থাকায় এলাকার মানুষ কষ্ট করে চলাচল করছে। তবে রাস্তাটির প্রকল্প দেওয়া আছে। প্রকল্প পাস হয়ে এলে রাস্তার কাজ দ্রুত শুরু হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের তাড়াশ উপজেলা প্রকৌশলী মো. ফজলুল হক বলেন, ওই রাস্তার দেড় কিলোমিটার পাকাকরণের জন্য আবেদন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর তা পাঠানো হয়েছে। সেটি পাস হয়ে এলেই দ্রুত রাস্তাটি পাকাকরণের কাজ করা হবে।