পাঁচবিবিতে কুটাহারা গ্রামে মাদ্রাসার মলমূত্রের দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন
- আপডেট সময় : ১০:০২:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ মার্চ ২০২৪
- / ৩৪৩ বার পড়া হয়েছে
দবিরুল ইসলাম পাঁচবিবি(জয়পুরহাট) প্রতিনিধিঃ
জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলায় বাগজানা ইউনিয়নের পশ্চিম কুটাহারা গ্রামের একটি আবাসিক মাদরাসার টয়লেটের বর্জ্য নির্গমনে সেফটি ট্যাংকি না থাকায় এবং উন্মুক্ত ড্রেনের মাধ্যমে মলমূত্র ড্রেনে নির্গত হওয়ায় দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে গ্রামবাসীর জনজীবন। এ ব্যাপারে বাগজানা ইউনিয়ন পরিষদে এর প্রতিকার চেয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী গ্রামবাসীরা।
অভিযোগে জানা যায়,পশ্চিম কুটুমহারা গ্রামের মাদ্রাসার মালিক একযুগ পূর্বে নিজের সম্পত্তিতে ৪ তলা ফ্লাট নির্মাণ করে পরিবারসহ বসবাস করলেও মাদ্রাসার জন্য কোন সেফটি ট্যাঙ্ক নির্মাণ করেননি। খুলে বসেছেন একটি ব্যক্তিগত বাণিজ্যিক আবাসিক মাদ্রাসা। সেখানে ছাত্রের সংখ্যা দেড়শ জনেরও অধিক। বাড়ির পাশ দিয়ে গ্রামের সড়কের পথে খোলা ড্রেন নির্মাণ করে সরাসরি রাস্তার সরকারি ড্রেনে মলমূত্র নির্গত করছেন দীর্ঘদিন থেকে। ফলে ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায় চরম দুর্গন্ধ । নাকে রুমাল চেপে চলাচল করতে হচ্ছে গ্রামবাসীকে।
ওই গ্রামের ভুক্তভোগী অভিযোগকারী আলহাজ্ব মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,দীর্ঘদিন আমরা এই দুর্ভোগ সহ্য করছি।বিষয়টি একাধিকবার মাদরাসা কর্তৃপক্ষের কাছে জানিয়েও কোনো সমাধান হয়নি। তাই ইউনিয়ন পরিষদে লিখিত অভিযোগ করে আমরা গ্রামবাসীরা এর প্রতিকার চেয়েছি । আপনারাও গিয়ে একটু বিষয়টি দেখেন?
ওই গ্রামের বাসিন্দা নোমান হামজা বলেন, ১০-১২ বছর আগে এই ফ্লাট তথা মাদ্রাসাটি করা হয়। সেফটি ট্যাংক না থাকায় এদের স্যানিটেশন ব্যবস্থা খুবই দুর্বল। দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ায় এলাকায় পরিবেশ দূষণ ঘটাচ্ছে।কমলমতি ছাত্ররাও স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। সমস্যা সমাধানে আমি মাদ্রাসা প্রধানের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
ঐ গ্রামের ভুক্তভোগী বৃদ্ধা শ্রীমতি ছায়া রানী বলেন,আমি অসুস্থ মানুষ। সব সময় বাড়িতেই অবস্থান করি। ওই মাদরাসার টয়লেটের মলমূত্র আমার বাড়ির সামনে দিয়ে যায়। দুর্গন্ধে থাকা যায় না। আবার পোকা ও মশার জন্ম হয়। এ জন্য দিন-রাত সব সময় মশারির ভেতরই থাকতে হয়।
ভুক্তোভোগী মোঃ আলী হাসান চঞ্চল, শ্রী বিনয় চক্রবর্তী, বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী, শ্রী অমল মোহন্ত,শ্রীমতি অর্চনা রানি মহন্ত ও শ্রীমতি গায়ত্রী মোহন্ত আক্ষেপ করে বলেন,আমরা এখানে অনেক অসহায় হয়ে পড়েছি। আমাদের বাড়ির সামনে এই দুর্গন্ধ বাতাস আর সহ্য করতে পারছি না। এমন দূষণ পরিবেশের জন্যও হুমকি স্বরূপ! আমরা এর প্রতিকার চাই?
এ বিষয়ে বাগজানা ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নাম্বার ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ আরিফ হোসেন বলেন, সমস্যাটি এখন চরম আকার ধারণ করেছে। ওই মাদরাসায় আবাসিকে প্রায় ১৫০ জনের অধিক ছাত্র অবস্থান করছে।প্রতিনিয়ত টয়লেটের বর্জ্য ও মলমূত্র মাদরাসা সংলগ্ন একটি ড্রেনে গিয়ে পড়ে। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে গ্রামবাসীকে। অবশ্যই এর একটা প্রতিকার হওয়া দরকার।
অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে গিয়ে ওই ফ্লাটের মালিক মাদরাসার প্রধান শিক্ষক মুফতি মোঃ নোমান জাহাঙ্গীরের কাছে সমস্যা সম্পর্কে সমাধানের ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেবেন কিনা জিজ্ঞেস করতে ডাকলে তিনি ক্যামেরার সামনে সাক্ষাৎকার দিতে আসেননি। ঘরের ভেতর থেকেই সমস্যাটি সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়ে উল্টো অভিযোগ করে বলেন, আমার জায়গায় আমি যা ইচ্ছে তাই করবো তাতে আপনাদের কি? কিছু করার থাকলে করেন। বেশি কিছু বললে আপনাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিব বলে সাংবাদিকদের হুমকি দেন।
এ বিষয়ে বাগজানা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ নাজমুল হক বলেন,সমস্যাটির অভিযোগ পেয়ে আমিসহ কয়েকজন ইউপি সদস্য সরজমিনে গিয়ে দেখেছি ঘটনা সত্য। এ ব্যাপারে মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষককে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য বলা হয়েছে।