ঢাকা ০৪:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পিকনিকের নামে নৌকায় চলছে অশ্লীল নৃত্য

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৩:২৫:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ জুলাই ২০২৩
  • / ৪৩০ বার পড়া হয়েছে

রফিকুল ইসলাম , তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ

বর্ষার মৌসুমে চলনবিল এলাকায় নৌ-ভ্রমণের নামে জমজমাট ভাবে চলছে অশ্লীল নৃত্য, জুয়া ও মাদকের আসর। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে একশ্রেণীর অসাধু ব্যক্তি পিকনিক ও নৌকা ভ্রমণের নামে নর্তকিদের ভাড়া করে এনে অশ্লীল কার্যকলাপে মত্ত হয়ে ওঠে। তাদের উচ্চস্বরে বাজানো মাইকের শব্দে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় চলনবিল এলাকায় পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা ভ্রমণ পিপাসুদের ।

সরেজমিনে চলনবিলের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে গিয়ে দেখা যায়, বেশির ভাগ ভ্রমণ নৌকার সামনে অশ্লীল পোশাকে নাচছেন নর্তকীসহ হিজড়ারা। আর এদের সঙ্গে নৌকায় নেশাজাতীয় দ্রব্য পান করে নাচছেন কিশোর-যুবকরা। নৌকার মধ্যেই বসানো জুয়া ও মাদকের আসর। অ-থৈ পানির মধ্যে নৌকায় চেপে এসব অপকর্ম হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় বেপরোয়াভাবে চলছে এসব কার্যক্রম। এতে বিলপাড়ের মানুষের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, নাটোরের গুরুদাসপুরসহ পাশ্ববর্তী , সিংড়া ও রায়গঞ্জ ও উল্লাপাড়া এলাকা থেকে একশ্রেণির অসাধু ব্যক্তি ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে বেড়িয়ে পড়ে নৌকা ভ্রমণে। সকাল, দুপুর ও রাতের খাবার রান্না হয় নৌকাতেই। স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে নর্তকি ও অখ্যাত কণ্ঠশিল্পীদের ভাড়া করে আনা হয়। এরপর উচ্চস্বরে গান-বাজনার তালে তালে নৌকার মধ্যেই চলে অশ্লীল নৃত্য। পাশাপাশি বসে জুয়া ও মাদকের আসর। এসব নর্তকী ও হিজড়াদের অন্য জায়গা থেকে টাকা দিয়ে এনে অবৈধ এমন কর্মকান্ড চালায় ভ্রমণে আসা যুবকরা। নর্তকী ও হিজড়া থাকা নৌকাগুলোর বেশিরভাগ অংশই ছাউনি দেওয়া। আর দিনে নাচের মাধ্যমে আনন্দ দিলেও রাতে ঘটছে অসামাজিক কার্যকলাপ। বর্ষা মৌসুমে প্রতিদিনই ছোট-বড় অসংখ্য ভ্রমণ নৌকা চলে বিল এলাকায় । কিন্তু নৌকা ভ্রমণের নামে বিল এলাকায় বাজানো হয় উচ্চ শব্দে গান-বাজনা।

হিন্দি ও ডিজে গানের তালে তালে চলে অশ্লীল নৃত্য, অসামাজিক কার্যকলাপ ও মাদক সেবন। ফলে নৌকা ভ্রমণের নামে অপসংস্কৃতির চর্চা, শব্দদূষণ ও মাদকের উপদ্রব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বিল পাড়ের স্থানীয় বাসিন্দা মো. ইব্রাহিম, জয়ান উদ্দীন, সানা উল্লাহসহ একাধিক বাসিন্দারা জানান, বর্ষা মৌসুমে বিলে পানি অাসলেই প্রতি বছর নৌকাভ্রমণের নামে চলে নানান অসামাজিক কার্যকলাপ। এবারও বর্ষার পানি আসার সাথে সাথে শুরু হয়েছে নৌকা ভ্রমণ। দিনরাত উচ্চশব্দে গান-বাজনা বাজিয়ে চলে নৌকা। মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে নর্তকী ও হিজড়ারা নৃত্য করে। অপসংস্কৃতি রোধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তাঁরা।

তাড়াশ থানার (ওসি) মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, চলনবিল একটা বিশাল এলাকা। সব এলাকার খবর রাখা কষ্টকর তবে শুনেছি । এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি আর অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

পিকনিকের নামে নৌকায় চলছে অশ্লীল নৃত্য

আপডেট সময় : ০৩:২৫:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ জুলাই ২০২৩

রফিকুল ইসলাম , তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ

বর্ষার মৌসুমে চলনবিল এলাকায় নৌ-ভ্রমণের নামে জমজমাট ভাবে চলছে অশ্লীল নৃত্য, জুয়া ও মাদকের আসর। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে একশ্রেণীর অসাধু ব্যক্তি পিকনিক ও নৌকা ভ্রমণের নামে নর্তকিদের ভাড়া করে এনে অশ্লীল কার্যকলাপে মত্ত হয়ে ওঠে। তাদের উচ্চস্বরে বাজানো মাইকের শব্দে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় চলনবিল এলাকায় পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা ভ্রমণ পিপাসুদের ।

সরেজমিনে চলনবিলের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে গিয়ে দেখা যায়, বেশির ভাগ ভ্রমণ নৌকার সামনে অশ্লীল পোশাকে নাচছেন নর্তকীসহ হিজড়ারা। আর এদের সঙ্গে নৌকায় নেশাজাতীয় দ্রব্য পান করে নাচছেন কিশোর-যুবকরা। নৌকার মধ্যেই বসানো জুয়া ও মাদকের আসর। অ-থৈ পানির মধ্যে নৌকায় চেপে এসব অপকর্ম হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় বেপরোয়াভাবে চলছে এসব কার্যক্রম। এতে বিলপাড়ের মানুষের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, নাটোরের গুরুদাসপুরসহ পাশ্ববর্তী , সিংড়া ও রায়গঞ্জ ও উল্লাপাড়া এলাকা থেকে একশ্রেণির অসাধু ব্যক্তি ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে বেড়িয়ে পড়ে নৌকা ভ্রমণে। সকাল, দুপুর ও রাতের খাবার রান্না হয় নৌকাতেই। স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে নর্তকি ও অখ্যাত কণ্ঠশিল্পীদের ভাড়া করে আনা হয়। এরপর উচ্চস্বরে গান-বাজনার তালে তালে নৌকার মধ্যেই চলে অশ্লীল নৃত্য। পাশাপাশি বসে জুয়া ও মাদকের আসর। এসব নর্তকী ও হিজড়াদের অন্য জায়গা থেকে টাকা দিয়ে এনে অবৈধ এমন কর্মকান্ড চালায় ভ্রমণে আসা যুবকরা। নর্তকী ও হিজড়া থাকা নৌকাগুলোর বেশিরভাগ অংশই ছাউনি দেওয়া। আর দিনে নাচের মাধ্যমে আনন্দ দিলেও রাতে ঘটছে অসামাজিক কার্যকলাপ। বর্ষা মৌসুমে প্রতিদিনই ছোট-বড় অসংখ্য ভ্রমণ নৌকা চলে বিল এলাকায় । কিন্তু নৌকা ভ্রমণের নামে বিল এলাকায় বাজানো হয় উচ্চ শব্দে গান-বাজনা।

হিন্দি ও ডিজে গানের তালে তালে চলে অশ্লীল নৃত্য, অসামাজিক কার্যকলাপ ও মাদক সেবন। ফলে নৌকা ভ্রমণের নামে অপসংস্কৃতির চর্চা, শব্দদূষণ ও মাদকের উপদ্রব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বিল পাড়ের স্থানীয় বাসিন্দা মো. ইব্রাহিম, জয়ান উদ্দীন, সানা উল্লাহসহ একাধিক বাসিন্দারা জানান, বর্ষা মৌসুমে বিলে পানি অাসলেই প্রতি বছর নৌকাভ্রমণের নামে চলে নানান অসামাজিক কার্যকলাপ। এবারও বর্ষার পানি আসার সাথে সাথে শুরু হয়েছে নৌকা ভ্রমণ। দিনরাত উচ্চশব্দে গান-বাজনা বাজিয়ে চলে নৌকা। মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে নর্তকী ও হিজড়ারা নৃত্য করে। অপসংস্কৃতি রোধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তাঁরা।

তাড়াশ থানার (ওসি) মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, চলনবিল একটা বিশাল এলাকা। সব এলাকার খবর রাখা কষ্টকর তবে শুনেছি । এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি আর অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।