ফেসবুক স্ট্যাটাস নিয়ে পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ আহত ২
- আপডেট সময় : ১০:০৮:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ জুন ২০২৩
- / ৪৫৮ বার পড়া হয়েছে
দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি :
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে ফেসবুক স্ট্যাটাস নিয়ে এক আ’লীগ নেতাকে মারধর, অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় উত্তেজনা এখন চরমে। পাল্টাপাল্টি অভিযোগ এবং বিক্ষোভ মিছিল করেছে দুই পক্ষের লোকজনই।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাতে ফেসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের মহব্বতপুরবাজারে সুরমা ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশীদ ও তাঁর লোকজন আ’লীগ নেতা শফিকুল ইসলামের (অব: সৈনিক) অফিসে ঢুকে তাঁকে বেধড়ক মারপিট এবং আ’লীগ অফিস ভাংচুর করা হয়েছে। এ ঘটনায় শনিবার রাত থেকেই দুই পক্ষের মধ্যে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। রোববার স্থানীয় মহব্বতপুরবাজারে চেয়ারম্যান পক্ষ এবং উপজেলা সদরে আ’লীগের একাংশের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের টিলাগাঁও খাসিয়ামারা নদীর রাবারড্যাম উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ হয়নি বলে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন ইউনিয়ন আ’লীগ সভাপতি (একাংশ) শফিকুল ইসলাম। এ ঘটনায় শনিবার রাতে ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশীদ এর ভাই এবং তাঁর লোকজন স্থানীয় আ’লীগ অফিসে ঢুকে ফেসবুক স্ট্যাটাস ডিলেট করার অনুরোধ করেন। স্ট্যাটাস ডিলেট করা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। পরে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং আহত অবস্থায় শফিকুল ইসলাম (৫৪) ও তাঁর বোন সুফিয়া খাতুন (৬৫) কে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করে।
এদিকে এ ঘটনায় মহব্বতপুরবাজারে দুই পক্ষের উত্তেজনা চলতে থাকলে রাতভর পুলিশের টহল অব্যাহত থাকে। রোববার দুপুরে সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আবু সাঈদ, সহকারী পুলিশ সুপার (ছাতক-দোয়ারাবাজার) রণজয় চন্দ্র মল্লিক ও দোয়ারাবাজার থানার ওসি দেবদুলাল ধর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
আ’লীগ নেতা শফিকুল ইসলাম বলেন, রাবারড্যাম প্রকল্পের অনিয়ম দুর্ণীতি নিয়ে স্ট্যাটাস দেওয়ায় উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশীদ ও তার ৩ ভাই এবং তার লোকজন মিলে আমার উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এক পর্যায়ে তারা অফিসঘর এবং বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর করতে থাকে ও মুহুর্তেই তারা আমাকে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে। খবর পেয়ে আমার বোন বাড়ি থেকে আসলে তার উপরও চড়াও হয় তারা এবং তাকেও বেধড়ক মারপিট করে গুরুতর আহত করে। আমার অপরাধ আমি অনিয়ম দুর্ণীতি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছি।
ঘটনার সত্যতা জানতে সুরমা ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশীদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মারধর, অফিস ভাঙচুরের কোনো ঘটনা আমাদের কেউ ঘটাননি। ফেসবুক স্ট্যাটাস নিয়ে কথা-কাটাকাটির প্রায় চল্লিশ মিনিট পর শফিকুল ইসলামের ছোট ভাই জাকির হোসেন বোগলাবাজার থেকে এসে অফিসঘর ও বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর করে। নিজেরাই ঘটনা ঘটিয়ে এখন আমাদের ঘায়েল করতে চাচ্ছে। শফিকুল ইসলাম ২০১১ সালেও নিজেরা বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর করে অন্যদের ঘায়েল করেছিলো। বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর করায় আমি এর বিচার ও তীব্র প্রতিবাদ জানাই।
ইউপি সদস্য ও স্থানীয় আ’লীগ নেতা হাছন আলী বলেন, দুই পক্ষের কথা-কাটাকাটির সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে দুই পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করেছি। এ ঘটনার প্রায় চল্লিশ মিনিট পর শফিকুল ইসলামের ছোট ভাই জাকির হোসেন এসে উত্তপ্ত হয় এবং প্রকাশ্যে অফিস ভাঙচুর করে।
জানতে চাইলে দোয়ারাবাজার থানার ওসি দেবদুলাল ধর বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। ঘটনাটি স্পর্শকাতর হওয়ায় আমরা ঘটনাটি অধিক তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবো।