ঢাকা ০৪:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২২ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
শ্যামনগরে স্কুল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি এবং ছাত্র-ছাত্রীদের সমন্বয়ে সেচ্ছাসেবী দল গঠন পরিতোষ কুমার বৈদ্য পাঁচবিবিতে পোস্ট অফিস সড়কে ড্রেনেজ ব্যবস্থার বেহাল দশা,জনদুর্ভোগ চরমে হরিপুরে কুলিক নদীতে গোসল করতে গিয়ে এক যুবক নিখোঁজ পাঁচবিবিতে চলন্ত ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে যুবকের আত্মহত্যা জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেলো মধুপুরের আনারস জলবায়ু পদক্ষেপে বৈশ্বিক কাঠামোর আমূল পরিবর্তন চান ড. ইউনূস গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন হতে পারে আগামী সপ্তাহে: তথ্য উপদেষ্টা পহেলা নভেম্বর থেকে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ লোক দেখানো কাজ করে ডেঙ্গু প্রতিরোধ সম্ভব নয়: হাসান আরিফ পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে যুক্তরাজ্যের সহযোগিতা চাইল বাংলাদেশ

বরিশালে নামের মিল থাকায় জেল খেটেছেন মসজিদের ইমাম

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৯:১৭:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ জুলাই ২০২৩
  • / ৪০৯ বার পড়া হয়েছে

মোঃ মশিউর রহমান সুমন, বরিশাল

বরিশালের বাকেরগঞ্জে নামের মিল থাকায় যৌতুক মামলায় তিনদিন কারাভোগ করেছেন সিরাজুল ইসলাম হাওলাদার নামে এক মসজিদের ইমাম। পুলিশের ভুলে এমনটা হয়েছে বলে দাবি ভুক্তভোগী সিরাজুলের।মামলার প্রকৃত আসামী একই গ্রামের আরেক সিরাজুল ইসলাম বিষয়টি আদালত নিশ্চিত করার রোববার (২জুলাই) বিকেল ৫টার দিকে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান ওই ইমাম।

এর আগে ঈদুল আযহা উদ্ যাপন করতে সিরাজুল বাড়িতে এলে শুক্রবার দুপুরে তাকে গ্রেফতার করেন বাকেরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক মোঃ কিবরিয়া। ভুক্তভোগী সিরাজুল ইসলাম ঢাকার একটি মসজিদে ইমামতি করেন।তিনি বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার রঙ্গ শ্রী ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের মেনহাজ হাওলাদারের ছেলে।

মুক্তি পেয়ে ইমাম সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমার ও আসামির নাম একই। দুজনই হাওলাদার বংশের। তার ওপর আমার বাবার নাম আর আসামির বাবার নামও এক। আমাদের ঠিকানাও একই গ্রামে তাই পুলিশের ভুল হয়েছে। রোববার বেলা দেড়টার দিকে আমাকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেন বাকেরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক মোঃ কিবরিয়া।

পরে জানতে পারি সোনিয়া নামের এক গৃহবধূর যৌতুক মামলায় আসামি আমি।ওই মামলায় আমাকে গ্রেফতার দেখিয়ে শুক্রবার বিকালে কারাগারে পাঠানো হয়। সিরাজুল আরো বলেন, গ্রেফতারের পর গ্রামের স্বজনেরা মামলার কাগজপত্র তুলেন।এতে দেখা যায় আসামি সিরাজুল ইসলাম ছাড়া অন্য আসামিরা অচেনা।পরে গ্রামের মুরব্বিদের সহযোগিতায় খোঁজ খবর নিয়ে আসলো আসামি সিরাজুল ইসলামের সন্ধান পাওয়া গেছে।

ওই সিরাজের ছেলে হাসানের স্ত্রী সোনিয়া ২০১৯ সালে মামলাটি দায়ের করেছেন। মামলার অপর দুই আসামী হলেন হাসান ও তার মামা ফারুক। এসব কাগজপত্র আদালতে দাখিলের পর আমাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় বলে জানান মসজিদের ইমাম সিরাজুল।

রঙ্গ শ্রী ইউনিয়নের চৌকিদার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, প্রকৃত আসামি সিরাজুল ইসলাম এলাকার জামাই। গ্রামে তার পরিচিতি নেই। তিন বছর ধরে বাকেরগঞ্জ থানা থেকে তার কাছে যৌতুক মামলার ওয়ারেন্ট আসানি সিরাজের সন্ধান চাওয়া হচ্ছিল।

আসামীর বাবার নাম ও বংশের মিল অনুযায়ী ঢাকার মসজিদের ইমাম সিরাজ ছাড়া অন্য কোন সিরাজের সন্ধান এলাকাতে পাইনি।শুক্রবার ইমাম সিরাজকে পুলিশ গ্রেফতার করে। পরে স্বজনদের অভিযোগের ভিত্তিতে আসল সিরাজের সন্ধানে নামা হয়।

মামলার অপর আসামি ফারুকের সন্ধান পাওয়ার পর তিনি স্বীকার করেন, ভগ্নিপতি সিরাজুল ইসলামের ছেলে হাসানের স্ত্রী সোনিয়া এই মামলাটি দায়ের করেছেন। মামলার অন্য আসামিরা আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন। একমাত্র সিরাজুল ইসলাম জামিন নেননি।

যদিও প্রকৃত আসামি সিরাজকেই গ্রেফতার করা হয়েছিলো বলে দাবি করেছেন বাকেরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক গোলাম কিবরিয়া।বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মাকসুদুর রহমান বলেন, ওয়ারেন্ট অনুযায়ী সিরাজ নামে একজনকে গ্রেফতার করেছেন কিবরিয়া।

যে ওয়ারেন্টের কাগজে লেখা সিরাজের নাম বাবার নাম ও ঠিকানার সঙ্গে গ্রেফতার হওয়া সিরাজের সবকিছু ঠিক আছে। আর এখন আমরা শুনতে পেরেছি হুবহু ওই নামে আরও এক সিরাজ বয়েছেন একই এলাকায়। তবে এই সিরাজের বাবার নামের সঙ্গে গ্রেফতার হওয়া সিরাজের বাবার নামের মিল থাকলেও এখানে তার শশুর বাড়ি। বাবার বাড়ি অন্যএ।তিনি বলেন, এখানে পুলিশ কর্মকর্তার দোষ দেখছি না। কারন তিনি ওয়ারেন্ট মিলিয়ে আসামি গ্রেফতার করেছেন।তাই পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আর প্রকৃত ব্যক্তির সন্ধানে কাজও চলছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

বরিশালে নামের মিল থাকায় জেল খেটেছেন মসজিদের ইমাম

আপডেট সময় : ০৯:১৭:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ জুলাই ২০২৩

মোঃ মশিউর রহমান সুমন, বরিশাল

বরিশালের বাকেরগঞ্জে নামের মিল থাকায় যৌতুক মামলায় তিনদিন কারাভোগ করেছেন সিরাজুল ইসলাম হাওলাদার নামে এক মসজিদের ইমাম। পুলিশের ভুলে এমনটা হয়েছে বলে দাবি ভুক্তভোগী সিরাজুলের।মামলার প্রকৃত আসামী একই গ্রামের আরেক সিরাজুল ইসলাম বিষয়টি আদালত নিশ্চিত করার রোববার (২জুলাই) বিকেল ৫টার দিকে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান ওই ইমাম।

এর আগে ঈদুল আযহা উদ্ যাপন করতে সিরাজুল বাড়িতে এলে শুক্রবার দুপুরে তাকে গ্রেফতার করেন বাকেরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক মোঃ কিবরিয়া। ভুক্তভোগী সিরাজুল ইসলাম ঢাকার একটি মসজিদে ইমামতি করেন।তিনি বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার রঙ্গ শ্রী ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের মেনহাজ হাওলাদারের ছেলে।

মুক্তি পেয়ে ইমাম সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমার ও আসামির নাম একই। দুজনই হাওলাদার বংশের। তার ওপর আমার বাবার নাম আর আসামির বাবার নামও এক। আমাদের ঠিকানাও একই গ্রামে তাই পুলিশের ভুল হয়েছে। রোববার বেলা দেড়টার দিকে আমাকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেন বাকেরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক মোঃ কিবরিয়া।

পরে জানতে পারি সোনিয়া নামের এক গৃহবধূর যৌতুক মামলায় আসামি আমি।ওই মামলায় আমাকে গ্রেফতার দেখিয়ে শুক্রবার বিকালে কারাগারে পাঠানো হয়। সিরাজুল আরো বলেন, গ্রেফতারের পর গ্রামের স্বজনেরা মামলার কাগজপত্র তুলেন।এতে দেখা যায় আসামি সিরাজুল ইসলাম ছাড়া অন্য আসামিরা অচেনা।পরে গ্রামের মুরব্বিদের সহযোগিতায় খোঁজ খবর নিয়ে আসলো আসামি সিরাজুল ইসলামের সন্ধান পাওয়া গেছে।

ওই সিরাজের ছেলে হাসানের স্ত্রী সোনিয়া ২০১৯ সালে মামলাটি দায়ের করেছেন। মামলার অপর দুই আসামী হলেন হাসান ও তার মামা ফারুক। এসব কাগজপত্র আদালতে দাখিলের পর আমাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় বলে জানান মসজিদের ইমাম সিরাজুল।

রঙ্গ শ্রী ইউনিয়নের চৌকিদার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, প্রকৃত আসামি সিরাজুল ইসলাম এলাকার জামাই। গ্রামে তার পরিচিতি নেই। তিন বছর ধরে বাকেরগঞ্জ থানা থেকে তার কাছে যৌতুক মামলার ওয়ারেন্ট আসানি সিরাজের সন্ধান চাওয়া হচ্ছিল।

আসামীর বাবার নাম ও বংশের মিল অনুযায়ী ঢাকার মসজিদের ইমাম সিরাজ ছাড়া অন্য কোন সিরাজের সন্ধান এলাকাতে পাইনি।শুক্রবার ইমাম সিরাজকে পুলিশ গ্রেফতার করে। পরে স্বজনদের অভিযোগের ভিত্তিতে আসল সিরাজের সন্ধানে নামা হয়।

মামলার অপর আসামি ফারুকের সন্ধান পাওয়ার পর তিনি স্বীকার করেন, ভগ্নিপতি সিরাজুল ইসলামের ছেলে হাসানের স্ত্রী সোনিয়া এই মামলাটি দায়ের করেছেন। মামলার অন্য আসামিরা আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন। একমাত্র সিরাজুল ইসলাম জামিন নেননি।

যদিও প্রকৃত আসামি সিরাজকেই গ্রেফতার করা হয়েছিলো বলে দাবি করেছেন বাকেরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক গোলাম কিবরিয়া।বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মাকসুদুর রহমান বলেন, ওয়ারেন্ট অনুযায়ী সিরাজ নামে একজনকে গ্রেফতার করেছেন কিবরিয়া।

যে ওয়ারেন্টের কাগজে লেখা সিরাজের নাম বাবার নাম ও ঠিকানার সঙ্গে গ্রেফতার হওয়া সিরাজের সবকিছু ঠিক আছে। আর এখন আমরা শুনতে পেরেছি হুবহু ওই নামে আরও এক সিরাজ বয়েছেন একই এলাকায়। তবে এই সিরাজের বাবার নামের সঙ্গে গ্রেফতার হওয়া সিরাজের বাবার নামের মিল থাকলেও এখানে তার শশুর বাড়ি। বাবার বাড়ি অন্যএ।তিনি বলেন, এখানে পুলিশ কর্মকর্তার দোষ দেখছি না। কারন তিনি ওয়ারেন্ট মিলিয়ে আসামি গ্রেফতার করেছেন।তাই পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আর প্রকৃত ব্যক্তির সন্ধানে কাজও চলছে।