বিরামপুরে ব্লাক কার্প মাছ চাষে সফলতা অর্জন রহিদুলের,৬০ কেজি ওজনের মাছ ২ লক্ষাধিক টাকায় বিক্রি
- আপডেট সময় : ০২:১৫:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ জুন ২০২৪
- / ৩২৮ বার পড়া হয়েছে
মোঃ ইব্রাহীম মিঞা, বিরামপুর(দিনাজপুর)প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায় বিদেশি প্রজাতির সুস্বাদু পানির ব্লাক কার্প (Black Crap) মাছ চাষে সফলতা অর্জন করেন রহিদুল ইসলাম।গত ৮ বছরে এক একটি ব্লাক কার্প মাছের ওজন ৫৫-৭০ কেজি হওয়ায় ২ লক্ষাধিক টাকার অধিক দামে বিক্রি করছেন তিনি। মাছটি সুস্বাদু হওয়ায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এর চাহিদা।
শুক্রবার (২৮ জুন) বিরামপুর উপজেলার ৭ নং পলিপ্রয়াগপুর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের দূর্গাপুর গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,রহিদুল ইসলামের ৩ বোন মৎস খামারের ১৬ বিঘার একটি পুকুরে ৫৫-৭০ কেজি ওজনের ব্লাক কার্প মাছগুলো অন্য একটি পুকুরে নেওয়ার জন্য তোলা হচ্ছে। বিশাল আকৃতির এক একটি মাছ তোলার সময় কোনো লাফালাফি না করার বিষয়ে জানতে চাইলে জেলেরা বলেন দীর্ঘ ৭-৮ বছর ধরে এই জালে তাদের ধরা হয় এবং পুনরায় ছেড়ে দেওয়া হয় এ কারনে লাফালাফি করে না।
মৎস খামারী রহিদুল ইসলাম বলেন,দেশের বিভিন্ন জেলায় এসমস্ত মাছ তিনি বিক্রি করে থাকেন। বিশেষ করে টিকিট কেটে মৎস শিকার যে সমস্ত পুকুরে হয়ে থাকে সে পুকুর মালিকগণ এই মাছগুলো ক্রয় করে নিয়ে যায়। জয়পুরহাট, সৈয়দপুর, দিনাজপুর সদরসহ ফুলবাড়ী উপজেলার বাজারগুলোতে ২ লক্ষ টাকার উপরে এই ৫৫-৭০ কেজি ওজনের ব্লাক কার্প মাছ তিনি বিক্রি করেছেন।প্রতি কেজি মাছের মূল্য ৪-৫ হাজার টাকা মাছের ওজন হিসেবে দাম হয়ে থাকে।
মৎস খামারি রহিদুল ইসলাম বিরামপুর পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের চকপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি তার ৩ মেয়ের নামে প্রায় ২ যুগের বেশি সময় ধরে মৎস চাষ করে আসছেন। বিরামপুর উপজেলায় ৮-৯টি পুকুরে তিনি মৎস চাষ করেন। এসমস্ত পুকুরগুলোর মধ্যে বেশির ভাগ পুকুরই তার লীজ নেওয়া। প্রথমে ছোট পরিসরে একটি পুকুরে মৎস চাষের মাধ্যমে তিনি তার স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে এগিয়ে চলেন। বর্তমানে তিনি একজন সফল মৎস খামারি,৯ টি পুকুর,মাছ বাজারে সরবরাহের জন্য ২ টি গাড়িসহ কোটি টাকার ব্যবসা করছেন তিনি। তার এসমস্ত পুকুরে স্থানীয় অনেকেরই হয়েছে কর্মসংস্থান। ব্লাক কার্প মাছ প্রথম অবস্থায় জুপ্লাঙ্কটন, পানির ছোট পোকা মাকড়, লার্ভা খেয়ে থাকে।বড় হয়ে প্রচুর শামুক খায় এছাড়াও সরিষার খৈল,চালের কুঁড়া,গমের ভুষি ইত্যাদি খাবার দিতে হয়। মাছগুলোর নিরাপত্তার জন্য পুকুরে ২ জন করে নাইট গার্ড ও সিসি ক্যামেরা লাগানো রয়েছে। এতে করে ৭-৮ বছরে প্রতিটি ৫৫-৭০ কেজি মাছের পেছনে ১ থেকে দেড় লক্ষাধিক টাকা ব্যয় হয়েছে বলে তিনি জানান।
বিরামপুর উপজেলা মৎস কর্মকর্তা কাওসার হোসেন বলেন, ব্লাক কার্প বিদেশি প্রজাতির মাছ।এর বৈজ্ঞানিক নাম মাইলোফেরিনগডন পিসেয়াস (Mylopharyngodon piceus)।এই মাছটি প্রচুর পরিমাণে শামুক খেয়ে থাকে এ কারণে একে স্নেইল কার্প বলা হয়ে থাকে। মাছ চাষের অন্যতম শত্রু শামুক দমনে এই মাছ চাষের প্রয়োজন আছে। এই মাছের প্রতি ১০০ গ্রামে রয়েছে ১৮.৫ গ্রাম প্রোটিন,১.১ গ্রাম ফ্যাট এবং ৩৮২ মি.গ্রা. ফসফরাস ও ৩৩৫ মি.গ্রা. ক্যালসিয়াম।ব্লাক কার্প মাছ এক বছরের মধ্যে ২-৩ কেজি ওজনের হয়ে থাকে এবং ৪-৫ বছরে ১৫-২০ কেজি ওজন হয়। এছাড়াও এই মাছ ২০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে আর এর ওজন ২ থেকে আড়াই মন পর্যন্ত হয়ে থাকে।এমাছ চাষ লাভজনক এই মাছ চাষে আগ্রহী প্রত্যেক মৎস চাষীকে আমরা উপজেলা মৎস অফিস থেকে পরামর্শ দিয়ে থাকি বলে জানান বিরামপুর উপজেলা মৎস কর্মকর্তা কাওসার হোসেন।