ঢাকা ০১:৫৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩০ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মেহেন্দিগঞ্জের তেতুলিয়া -কালাবদর ও গজারিয়া নদীতে বেপরোয়া মৌসুমি জেলেরা, অবাধে চলছে মা ইলিশ নিধন

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৮:৪০:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৩
  • / ৩৭১ বার পড়া হয়েছে

মোঃ মশিউর রহমান সুমন, মেহেন্দিগঞ্জ, (বরিশাল) প্রতিনিধিঃ

বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার তেতুলিয়া -কালাবদর, গজারিয়া নদীতে মা ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞায় প্রশাসনের সাথে চোর – পুলিশ খেলায় নেমেছে মৌসুমি জেলেরা। প্রশাসনের নিয়মিত অভিযানের পরও কোনভাবেই থামছে না মা ইলিশ শিকার। নিষেধাজ্ঞার ৫ দিনে কিছু জাল জব্দ ছাড়া তেমন কোন সাফল্য নেই মৎস্য অফিসের। মনে হচ্ছে তারা নিরব ভুমিকা পালন করছেন।

নদীতে দেখা যায়, তেতুলিয়া নদীর শ্রীপুর, মাছকাজী, লেঙ্গুটিয়া,আমিরগঞ্জ, কালদবদর নদীর চরশেফালী,সিন্নির চর, মিতুয়া, গজারিয়া নদীর দড়িচর খাজুরিয়া, নলবুবিয়া, বাগরজা, লালখারাবাদ, শান্তিরহাট, দাদপুরসহ বিভিন্ন পয়েন্টে চলছে অবাধে মা ইলিশ নিধন।মাছ ধরা নৌকায় ইঞ্জিনচালিত মেশিন বসিয়ে দ্রুতগতিতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে নদীতে। যে কারনে প্রশাসনের লোক নদীতে দেখলেই এসব মৌসুমি জেলেরা পালিয়ে যায়।

কয়েকজন জেলেরা জানায়, আগে নদীতে জাল ফেললে দু -চারটা ইলিশ ধরা পড়ত। কিন্তু এসময়ে (নিষেধাজ্ঞা চলাকালে) নদীর নিদিষ্ট পয়েন্টে জাল ফেলতে পারলেই ডিমওয়ালা ইলিশের সাথে প্রচুর ছোট ইলিশ ধরা পড়ছে। মৌসুমি জেলেরা কতিপয় পেশাদার জেলেদের মা মাছ শিকার করে নদীর তীরের ঝোঁপ -জঙ্গলে ও কচুরিপানার মধ্যে মাছ লুকিয়ে রাখছে এরপর সুযোগ বুঝে দূর-দূরান্ত থেকে আসা ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করে।প্রতিনিয়ত দেখা যাচ্ছে মোটর সাইকেল ও বাইসাইকেলে ব্যাগ ভর্তি করে সস্তায় এসব মাছ কিনে নিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন লোকজন।

এছাড়াও প্রশাসন নদীতে অভিযানে নামলে সঙ্গে সঙ্গে তাদের মোবাইল ফোনে জানিয়ে দেওয়ার জন্য নিয়োগ করা হয় বেশ কিছু তথ্য সরবরাহকারীকে।বিনিময়ে প্রত্যেককে শিকার করা মাছের ভাগ দেওয়া হয়। এদের কাজ হলো নদীর পাড়ে ঘুরে বেড়ানো এবং নদীতে অভিযান নামলেই মা ইলিশ নিধনকারী মৌসুমি জেলেদের সাবধান করে দেওয়া।

তবে মোসুমি জেলেদের নৌকা জব্দ করা গেলে ইলিশ নিধনের হার কমানো সম্ভব হবে।অন্যথায় অভিযান করে তেমন সফলতা পাওয়া যাবেনা।জেলেরা জানান, বর্তমানে প্রচুর ইলিশ জালে উঠছে।দিনের চেয়ে রাতেই বেশি নিরাপদ। তাই তারা রাতেই বেশি জাল ফেলছেন।বিক্রির জন্য তাদের কোন চিন্তা করতে হয়না। সাধারণ ক্রেতারা নদীর পাড়েই বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেন মাছ কেনার জন্য। কিছু ক্রেতা মোবাইলফোনে যোগাযোগ করেন।ফোন দিলেই তারা এসে মাছ নিয়ে যায়।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা কামাল হোসেন বলেন, আমরা প্রজনন মৌসুম শুরু হওয়ার আগ থেকেই জেলেদের সরকারি নিয়ন মানতে উদ্বুদ্ধ করেছি।আমরা যখনই সংবাদ পাচ্ছি তখনই সে এলাকায় অভিযান চালাচ্ছি। এখন পর্যন্ত বেশ কিছু জাল জব্দ করেছি।আমাদের অভিযান ২৪ ঘন্টা চলছে ও পর্যাপ্ত টহলের ব্যবস্থা রয়েছে। তবে কিছু মৌসুমি জেলেরা ফাঁকে ফাঁকে ও রাতের আধারে জাল ফেলে মা ইলিশ শিকার করছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

মেহেন্দিগঞ্জের তেতুলিয়া -কালাবদর ও গজারিয়া নদীতে বেপরোয়া মৌসুমি জেলেরা, অবাধে চলছে মা ইলিশ নিধন

আপডেট সময় : ০৮:৪০:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৩

মোঃ মশিউর রহমান সুমন, মেহেন্দিগঞ্জ, (বরিশাল) প্রতিনিধিঃ

বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার তেতুলিয়া -কালাবদর, গজারিয়া নদীতে মা ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞায় প্রশাসনের সাথে চোর – পুলিশ খেলায় নেমেছে মৌসুমি জেলেরা। প্রশাসনের নিয়মিত অভিযানের পরও কোনভাবেই থামছে না মা ইলিশ শিকার। নিষেধাজ্ঞার ৫ দিনে কিছু জাল জব্দ ছাড়া তেমন কোন সাফল্য নেই মৎস্য অফিসের। মনে হচ্ছে তারা নিরব ভুমিকা পালন করছেন।

নদীতে দেখা যায়, তেতুলিয়া নদীর শ্রীপুর, মাছকাজী, লেঙ্গুটিয়া,আমিরগঞ্জ, কালদবদর নদীর চরশেফালী,সিন্নির চর, মিতুয়া, গজারিয়া নদীর দড়িচর খাজুরিয়া, নলবুবিয়া, বাগরজা, লালখারাবাদ, শান্তিরহাট, দাদপুরসহ বিভিন্ন পয়েন্টে চলছে অবাধে মা ইলিশ নিধন।মাছ ধরা নৌকায় ইঞ্জিনচালিত মেশিন বসিয়ে দ্রুতগতিতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে নদীতে। যে কারনে প্রশাসনের লোক নদীতে দেখলেই এসব মৌসুমি জেলেরা পালিয়ে যায়।

কয়েকজন জেলেরা জানায়, আগে নদীতে জাল ফেললে দু -চারটা ইলিশ ধরা পড়ত। কিন্তু এসময়ে (নিষেধাজ্ঞা চলাকালে) নদীর নিদিষ্ট পয়েন্টে জাল ফেলতে পারলেই ডিমওয়ালা ইলিশের সাথে প্রচুর ছোট ইলিশ ধরা পড়ছে। মৌসুমি জেলেরা কতিপয় পেশাদার জেলেদের মা মাছ শিকার করে নদীর তীরের ঝোঁপ -জঙ্গলে ও কচুরিপানার মধ্যে মাছ লুকিয়ে রাখছে এরপর সুযোগ বুঝে দূর-দূরান্ত থেকে আসা ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করে।প্রতিনিয়ত দেখা যাচ্ছে মোটর সাইকেল ও বাইসাইকেলে ব্যাগ ভর্তি করে সস্তায় এসব মাছ কিনে নিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন লোকজন।

এছাড়াও প্রশাসন নদীতে অভিযানে নামলে সঙ্গে সঙ্গে তাদের মোবাইল ফোনে জানিয়ে দেওয়ার জন্য নিয়োগ করা হয় বেশ কিছু তথ্য সরবরাহকারীকে।বিনিময়ে প্রত্যেককে শিকার করা মাছের ভাগ দেওয়া হয়। এদের কাজ হলো নদীর পাড়ে ঘুরে বেড়ানো এবং নদীতে অভিযান নামলেই মা ইলিশ নিধনকারী মৌসুমি জেলেদের সাবধান করে দেওয়া।

তবে মোসুমি জেলেদের নৌকা জব্দ করা গেলে ইলিশ নিধনের হার কমানো সম্ভব হবে।অন্যথায় অভিযান করে তেমন সফলতা পাওয়া যাবেনা।জেলেরা জানান, বর্তমানে প্রচুর ইলিশ জালে উঠছে।দিনের চেয়ে রাতেই বেশি নিরাপদ। তাই তারা রাতেই বেশি জাল ফেলছেন।বিক্রির জন্য তাদের কোন চিন্তা করতে হয়না। সাধারণ ক্রেতারা নদীর পাড়েই বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেন মাছ কেনার জন্য। কিছু ক্রেতা মোবাইলফোনে যোগাযোগ করেন।ফোন দিলেই তারা এসে মাছ নিয়ে যায়।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা কামাল হোসেন বলেন, আমরা প্রজনন মৌসুম শুরু হওয়ার আগ থেকেই জেলেদের সরকারি নিয়ন মানতে উদ্বুদ্ধ করেছি।আমরা যখনই সংবাদ পাচ্ছি তখনই সে এলাকায় অভিযান চালাচ্ছি। এখন পর্যন্ত বেশ কিছু জাল জব্দ করেছি।আমাদের অভিযান ২৪ ঘন্টা চলছে ও পর্যাপ্ত টহলের ব্যবস্থা রয়েছে। তবে কিছু মৌসুমি জেলেরা ফাঁকে ফাঁকে ও রাতের আধারে জাল ফেলে মা ইলিশ শিকার করছে।