ঢাকা ০৭:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ২৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
শ্যামনগরে স্কুল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি এবং ছাত্র-ছাত্রীদের সমন্বয়ে সেচ্ছাসেবী দল গঠন পরিতোষ কুমার বৈদ্য পাঁচবিবিতে পোস্ট অফিস সড়কে ড্রেনেজ ব্যবস্থার বেহাল দশা,জনদুর্ভোগ চরমে হরিপুরে কুলিক নদীতে গোসল করতে গিয়ে এক যুবক নিখোঁজ পাঁচবিবিতে চলন্ত ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে যুবকের আত্মহত্যা জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেলো মধুপুরের আনারস জলবায়ু পদক্ষেপে বৈশ্বিক কাঠামোর আমূল পরিবর্তন চান ড. ইউনূস গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন হতে পারে আগামী সপ্তাহে: তথ্য উপদেষ্টা পহেলা নভেম্বর থেকে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ লোক দেখানো কাজ করে ডেঙ্গু প্রতিরোধ সম্ভব নয়: হাসান আরিফ পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে যুক্তরাজ্যের সহযোগিতা চাইল বাংলাদেশ

হিলিতে বাড়ছে মসলা জাত পণ্যের দাম

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৪:২৫:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ মে ২০২৪
  • / ৩৩১ বার পড়া হয়েছে

মোঃ রাকিব হাসান ডালিম, হাকিমপুর (হিলি) প্রতিনিধি

এখনো প্রায় একমাস বাকি কোরবানি ঈদ।এর আগেই দিনাজপুরের হিলিতে বেড়েছে মসলা জাত পণ্যের দাম। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে জিরাসহ মসলা জাতীয় পণ্য আমদানি বৃদ্ধি পেয়েছে। যেখানে ১/২ গাড়ি জিরাসহ অন্যান্য মসলাপণ্য আমদানি হতো।এখন প্রতিদিনই ৫/৭ গাড়ী জিরাসহ মসলা পণ্য আমদানি হচ্ছে। প্রতি টন জিরা আমদানি হচ্ছে ৩ হাজার ১৩০ ডলার মুল্যে। কোরবানি ঈদের একমাস আগে দাম বৃদ্ধিতে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এটা ব্যবসায়ীদের কারসাজি।তারা অধিক মুনাফার আশায় মসলা জাত পণ্য মজুদ রেখে দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। আর খুচরা বিক্রেতারা বলছেন,আমরা ভারতীয় জিরা,আদা,চায়না রসুন বিক্রি করি। আমদানিকারকদের কাছ থেকে আমাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। তাই বিক্রিও করতে হচ্ছে বেশি দামে। আমদানিকারকরা বলছেন,ডলার সংকটের কারণে ভারত অভ্যন্তরে জিরাসহ অন্যান্য মসলা জাত পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে দাম কয়েক দিনের স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে জানান আমদানিকারকরা ।
আজ শনিবার দুপুরে হিলি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক মাস আগে মানভেদে জিরা বিক্রি হয়েছে প্রতিকেজি ৫৭০ থেকে ৫৮০ টাকা দরে। এখন সেই জিরাই কেজিতে ১৩০ টাকা বেড়ে ৭০০ থেকে ৭১০ টাকা কেজি দরে হচ্ছে। অন্যান্য মসলা পণ্যের দাম দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কালো এলাচ ২৬০০ থেকে ২৯০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও তা এখন ১০০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৭০০ থেকে ৩০০০ টাকা কেজি দরে এবং সাদা এলাচ মাঝারি ৩৪০০ শত টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও তা এখন কেজিতে ১০০ টাকা বেড়ে ৩ ৫০০ শত টাকা কেজি দরে, সাদা এলাচ বড় ধরণের ৪১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও তা কেজিতে ১০০ টাকা বেড়ে ৪২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও দারুচিনি, লং, গোল মরিচ,ধনিয়া,কালো জিরা কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে। এদিকে আমদানিকৃত আদা গেলো শনিবার (১৮ মে) প্রতিকেজি আদা ২৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও আজ শনিবার (২৫ মে) বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকায়। প্রতিকেজি দেশীয় রসুন ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও আজ বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকায়। এক মাস আগে দেশীয় শুকনা মরিচ ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও আজ তা কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে ২৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর গতকাল শুক্রবার দেশীয় পেঁয়াজ ৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও আজ তা কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর ভারতীয় পেঁয়াজ ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
রংপুর থেকে জিরা কিনতে আসা আকবর আলী জানান, আমি এক মাস আগে হিলিতে ঘুরতে এসে তখন ৫৮০ টাকা কেজি দরে জিরা কিনেছি। আজ হিলিতে একটি কাজে এসে জিরা কিনলাম ৭০০ টাকা কেজি দরে।
আদা কিনতে আসা ফরহার হোসেন বলেন, কোরবানি ঈদের আগে হঠাৎ করেই আদার দাম বেড়ে গেছে। গত শনিবার প্রতিকেজি আদা বিক্রি হয়েছিল। ২৪০ টাকা কেজি দরে। আমি ৬০ টাকা দিয়ে ২৫০ গ্রাম আদা কিনি। আর আজ শনিবার বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকা কেজি দরে। ৭০ টাকা দিয়ে ২৫০ গ্রাম আদা কিনলাম।
আরেক ক্রেতা ধরন্দা গ্রামের গোলাম মোর্শেদ বলেন, প্রতিবছর কোরবানি ঈদের আগে সব ধরনের মসলার দামে বাড়ে। এবারও বেড়েছে। গেলো শনিবার প্রতিকেজি রসুন কিনি ২০০ টাকা কেজি দরে। আর আজ শনিবার কিনতে হলো ২৪০ টাকা কেজি দরে।তিনি আক্ষেপ করে বলেন,হিলি বন্দর দিয়ে প্রতিদিন আদা আসছে। কিন্তু আমদানিকারক ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা মজুদ রেখে বেশি দামে বিক্রি করছেন।
শুকনা মরিচ,আদা-রসুন ও পেঁয়াজ বিক্রেতা ময়নুল ইসলাম বলেন,আদা হিলিবন্দর দিয়ে আমদানি হয়। আর চায়না রসুন আমদানি হয় অন্যদিকে দিয়ে। পাইকারি বিক্রেতাদের কাছ থেকে এক সপ্তাহ আগে এতিকেজি আদা ২২০ টাকায় কিনে ২৪০ টাকায় বিক্রি করি। আর রসুন ১৮০ টাকা কেজি দরে কিনে ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করি। কিনতেই পড়ছে প্রতিকেজি আদা ২৬০ টাকা এবং রসুন কিনতে পড়ছে ২২০ টাকা। আমরা কেজিতে ২০ টাকা লাভ রেখে বিক্রি করছি। এ কারণেই শুকনা মরিচ,পেঁয়াজ আদা-রসুনের দাম বেড়েছে।
ডলার সংকট কাটিয়ে উঠলে ও জিরা আমদানিতে শুল্ক কমলে দাম আরও কমে আসবে বলে মনে করছেন আমদানিকারকেরা।
হিলি কাষ্টমস সূত্রে জানা গেছে,চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২০ মে পর্যন্ত ভারতীয় ৩৮৩ টি ট্রাকে ১০ হাজার ৭১৭ মেট্রিক টন জিরা ও ভারতীয় ১৬ টি ট্রাকে ২৫৩ মেট্রিকটন এলাচ এবং ভারতীয় ২৪১ টি ট্রাকে ৪১৩৭ মেট্রিক টন আদা আমদানি হয়েছে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

হিলিতে বাড়ছে মসলা জাত পণ্যের দাম

আপডেট সময় : ০৪:২৫:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ মে ২০২৪

মোঃ রাকিব হাসান ডালিম, হাকিমপুর (হিলি) প্রতিনিধি

এখনো প্রায় একমাস বাকি কোরবানি ঈদ।এর আগেই দিনাজপুরের হিলিতে বেড়েছে মসলা জাত পণ্যের দাম। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে জিরাসহ মসলা জাতীয় পণ্য আমদানি বৃদ্ধি পেয়েছে। যেখানে ১/২ গাড়ি জিরাসহ অন্যান্য মসলাপণ্য আমদানি হতো।এখন প্রতিদিনই ৫/৭ গাড়ী জিরাসহ মসলা পণ্য আমদানি হচ্ছে। প্রতি টন জিরা আমদানি হচ্ছে ৩ হাজার ১৩০ ডলার মুল্যে। কোরবানি ঈদের একমাস আগে দাম বৃদ্ধিতে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এটা ব্যবসায়ীদের কারসাজি।তারা অধিক মুনাফার আশায় মসলা জাত পণ্য মজুদ রেখে দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। আর খুচরা বিক্রেতারা বলছেন,আমরা ভারতীয় জিরা,আদা,চায়না রসুন বিক্রি করি। আমদানিকারকদের কাছ থেকে আমাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। তাই বিক্রিও করতে হচ্ছে বেশি দামে। আমদানিকারকরা বলছেন,ডলার সংকটের কারণে ভারত অভ্যন্তরে জিরাসহ অন্যান্য মসলা জাত পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে দাম কয়েক দিনের স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে জানান আমদানিকারকরা ।
আজ শনিবার দুপুরে হিলি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক মাস আগে মানভেদে জিরা বিক্রি হয়েছে প্রতিকেজি ৫৭০ থেকে ৫৮০ টাকা দরে। এখন সেই জিরাই কেজিতে ১৩০ টাকা বেড়ে ৭০০ থেকে ৭১০ টাকা কেজি দরে হচ্ছে। অন্যান্য মসলা পণ্যের দাম দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কালো এলাচ ২৬০০ থেকে ২৯০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও তা এখন ১০০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৭০০ থেকে ৩০০০ টাকা কেজি দরে এবং সাদা এলাচ মাঝারি ৩৪০০ শত টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও তা এখন কেজিতে ১০০ টাকা বেড়ে ৩ ৫০০ শত টাকা কেজি দরে, সাদা এলাচ বড় ধরণের ৪১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও তা কেজিতে ১০০ টাকা বেড়ে ৪২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও দারুচিনি, লং, গোল মরিচ,ধনিয়া,কালো জিরা কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে। এদিকে আমদানিকৃত আদা গেলো শনিবার (১৮ মে) প্রতিকেজি আদা ২৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও আজ শনিবার (২৫ মে) বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকায়। প্রতিকেজি দেশীয় রসুন ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও আজ বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকায়। এক মাস আগে দেশীয় শুকনা মরিচ ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও আজ তা কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে ২৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর গতকাল শুক্রবার দেশীয় পেঁয়াজ ৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও আজ তা কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর ভারতীয় পেঁয়াজ ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
রংপুর থেকে জিরা কিনতে আসা আকবর আলী জানান, আমি এক মাস আগে হিলিতে ঘুরতে এসে তখন ৫৮০ টাকা কেজি দরে জিরা কিনেছি। আজ হিলিতে একটি কাজে এসে জিরা কিনলাম ৭০০ টাকা কেজি দরে।
আদা কিনতে আসা ফরহার হোসেন বলেন, কোরবানি ঈদের আগে হঠাৎ করেই আদার দাম বেড়ে গেছে। গত শনিবার প্রতিকেজি আদা বিক্রি হয়েছিল। ২৪০ টাকা কেজি দরে। আমি ৬০ টাকা দিয়ে ২৫০ গ্রাম আদা কিনি। আর আজ শনিবার বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকা কেজি দরে। ৭০ টাকা দিয়ে ২৫০ গ্রাম আদা কিনলাম।
আরেক ক্রেতা ধরন্দা গ্রামের গোলাম মোর্শেদ বলেন, প্রতিবছর কোরবানি ঈদের আগে সব ধরনের মসলার দামে বাড়ে। এবারও বেড়েছে। গেলো শনিবার প্রতিকেজি রসুন কিনি ২০০ টাকা কেজি দরে। আর আজ শনিবার কিনতে হলো ২৪০ টাকা কেজি দরে।তিনি আক্ষেপ করে বলেন,হিলি বন্দর দিয়ে প্রতিদিন আদা আসছে। কিন্তু আমদানিকারক ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা মজুদ রেখে বেশি দামে বিক্রি করছেন।
শুকনা মরিচ,আদা-রসুন ও পেঁয়াজ বিক্রেতা ময়নুল ইসলাম বলেন,আদা হিলিবন্দর দিয়ে আমদানি হয়। আর চায়না রসুন আমদানি হয় অন্যদিকে দিয়ে। পাইকারি বিক্রেতাদের কাছ থেকে এক সপ্তাহ আগে এতিকেজি আদা ২২০ টাকায় কিনে ২৪০ টাকায় বিক্রি করি। আর রসুন ১৮০ টাকা কেজি দরে কিনে ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করি। কিনতেই পড়ছে প্রতিকেজি আদা ২৬০ টাকা এবং রসুন কিনতে পড়ছে ২২০ টাকা। আমরা কেজিতে ২০ টাকা লাভ রেখে বিক্রি করছি। এ কারণেই শুকনা মরিচ,পেঁয়াজ আদা-রসুনের দাম বেড়েছে।
ডলার সংকট কাটিয়ে উঠলে ও জিরা আমদানিতে শুল্ক কমলে দাম আরও কমে আসবে বলে মনে করছেন আমদানিকারকেরা।
হিলি কাষ্টমস সূত্রে জানা গেছে,চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২০ মে পর্যন্ত ভারতীয় ৩৮৩ টি ট্রাকে ১০ হাজার ৭১৭ মেট্রিক টন জিরা ও ভারতীয় ১৬ টি ট্রাকে ২৫৩ মেট্রিকটন এলাচ এবং ভারতীয় ২৪১ টি ট্রাকে ৪১৩৭ মেট্রিক টন আদা আমদানি হয়েছে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে।