ঢাকা ০৫:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ অক্টোবর ২০২৪, ৫ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
মতিয়া চৌধুরীর জানাজা বৃহস্পতিবার, দাফন বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে স্ত্রী-সন্তানসহ সাবেক এমপি অসীম কুমারের ব্যাংক হিসেব জব্দ ৮ জাতীয় দিবস বাতিল করে আদেশ জারি শ্যামনগরে স্কুল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি এবং ছাত্র-ছাত্রীদের সমন্বয়ে সেচ্ছাসেবী দল গঠন পরিতোষ কুমার বৈদ্য পাঁচবিবিতে পোস্ট অফিস সড়কে ড্রেনেজ ব্যবস্থার বেহাল দশা,জনদুর্ভোগ চরমে হরিপুরে কুলিক নদীতে গোসল করতে গিয়ে এক যুবক নিখোঁজ পাঁচবিবিতে চলন্ত ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে যুবকের আত্মহত্যা জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেলো মধুপুরের আনারস জলবায়ু পদক্ষেপে বৈশ্বিক কাঠামোর আমূল পরিবর্তন চান ড. ইউনূস গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন হতে পারে আগামী সপ্তাহে: তথ্য উপদেষ্টা

বিরামপুরে যুগ যুগ ধরে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে চামঢাকির মন্ডপ মেলা

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৫:২৯:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ মে ২০২৩
  • / ৩৫১ বার পড়া হয়েছে

ইব্রাহীম মিঞা, বিরামপুর দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ

বাংলাদেশের মানুষ আর তার শৈশবের স্মৃতিতে গ্রামের মেলা জড়িয়ে নেই, এটা হতেই পারে না। গ্রামের শান্ত নিথর জীবনে গ্রামীণ মেলা যেন আনন্দের বন্যা নিয়ে হাজির হয়। দৈনন্দিন জীবনের গণ্ডির বাইরে মেলা যেন একটা দমকা হাওয়া। যেখানে হারিয়ে যাওয়ার নেই মানা। মানুষে মানুষে মিলবার জাত-পাত, ধর্মীয় পরিচয় পেছনে ফেলে এমন মিলবার জায়গা আর কোথায়? বাংলার এই মেলা ছাড়া!তবে আধুনিকতার অভিঘাতে ঐতিহ্যবাহী মেলাগুলোর চরিত্র বদলাচ্ছে।

বিরামপুরে প্রতিবছর জৈষ্ঠের দ্বিতীয় বুধবার উপজেলার বিনাইল ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডে চামঢাকির মেলা বসে। বিনাইল পুইনন্দা গ্রামের ২২টি হিন্দু পরিবারের আয়োজনে যুগ যুগ ধরে এই চামঢাকির মেলা হয়ে থাকে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে বিনাইল পুইনন্দা কালি মন্দির প্রাচীন একটি মন্দির। পুইনন্দা গ্রামের ভেতর রয়েছে চামঢাকির মন্দির এবং রাস্তার ধারে অনেক আগের তেঁতুল গাছের পার্শ্বে রয়েছে কালি মন্দির ও বট গাছের পার্শ্বে শিব মন্দির। জৈষ্ঠের দ্বিতীয় বুধবার উপলক্ষে এখানে দেড় দিনব্যাপী চামঢাকির মেলা বসে। ১ম দিন বুধবার ৩ টার পর থেকে মেলা শুরু হয়। এই দিনে নারীদের চেয়ে পুরুষের উপস্থিতি বেশি হয় এবং পরের দিন সকালে নারীদের উপস্থিতি বেশি হওয়ায় ঐদিনের মেলাকে অনেকেই বৌ মেলা বলে থাকে।বিনাইল ইউনিয়ন ছাড়াও ১৫ থেকে ১৬ টি গ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে নারী-পুরুষরা বিনাইল ইউনিয়নের পুইনন্দা চামঢাকির মেলায় আসে।

এই মেলাটি সফল করার লক্ষ্যে বিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খায়রুল আলম রাজু, বিনাইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাদশা, বিরামপুর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শ্রী শান্ত কুমার কুন্ডুসহ সংশ্লীষ্ট সকলে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করেন।

মেলায় জিলাপি ও মিষ্টির দোকান নিয়ে আসা বিরামপুর মুকুন্দপুর ইউনিয়নের চকদূরগা গ্রামের মৃত তোফায়েল উদ্দিনের ছেলে আজিম উদ্দিন(৬৫) জানান প্রায় ৪০ বছর ধরে এই মেলায় বাবার সাথে দোকান নিয়ে আসেন। মেলায় যেমন লোকজনের সমাগম ঘটে তেমন বেচাকেনা হয়।

বিনাইল পুইনন্দা মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি শ্রী কন্নক বর্মন জানিয়েছেন,মেলাটি ৪ একর জমির উপর প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ টি দোকান নিয়ে বসে আছে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা দোকানিরা। জানাযায় একদিন আগে থেকেই দোকানিরা এসে দোকানের জায়গা নির্ধারণ করে থাকে। মধু মাস হিসেবে নানান রকম ফলের দোকান, কসমেটিক, খেলনা, কাঠের তৈরি খেলনা সামগ্রী, মিষ্টি,দই, জিলাপি, ফুচকা চটপটি মাখা, আচার,পানসিগারেট, কাপড়সহ হরেক রকমের দোকান মেলায় লক্ষ্য করা যায়।

তিনি আরো জানান যে, আমরা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়,নির্যাতনের ভয়ে প্রতিবাদ করতে পারিনা। মন্দিরের নিজস্ব জমি যুগ যুগ ধরে দখল করে ভোগ করে আসছে এলাকার কিছু প্রভাবশালী ব্যাক্তীরা।আমরা এই জমিগুলো উদ্ধার ও কালি মন্দির সংস্কারের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

এ বিষয়ে মুঠোফোনে বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পরিমল কুমার সরকারের সাথে কথা বললে তিনি জানান, লিখিত ভাবে অভিযোগটি আসলে তিনি বিষয়টি দেখবেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

বিরামপুরে যুগ যুগ ধরে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে চামঢাকির মন্ডপ মেলা

আপডেট সময় : ০৫:২৯:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ মে ২০২৩

ইব্রাহীম মিঞা, বিরামপুর দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ

বাংলাদেশের মানুষ আর তার শৈশবের স্মৃতিতে গ্রামের মেলা জড়িয়ে নেই, এটা হতেই পারে না। গ্রামের শান্ত নিথর জীবনে গ্রামীণ মেলা যেন আনন্দের বন্যা নিয়ে হাজির হয়। দৈনন্দিন জীবনের গণ্ডির বাইরে মেলা যেন একটা দমকা হাওয়া। যেখানে হারিয়ে যাওয়ার নেই মানা। মানুষে মানুষে মিলবার জাত-পাত, ধর্মীয় পরিচয় পেছনে ফেলে এমন মিলবার জায়গা আর কোথায়? বাংলার এই মেলা ছাড়া!তবে আধুনিকতার অভিঘাতে ঐতিহ্যবাহী মেলাগুলোর চরিত্র বদলাচ্ছে।

বিরামপুরে প্রতিবছর জৈষ্ঠের দ্বিতীয় বুধবার উপজেলার বিনাইল ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডে চামঢাকির মেলা বসে। বিনাইল পুইনন্দা গ্রামের ২২টি হিন্দু পরিবারের আয়োজনে যুগ যুগ ধরে এই চামঢাকির মেলা হয়ে থাকে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে বিনাইল পুইনন্দা কালি মন্দির প্রাচীন একটি মন্দির। পুইনন্দা গ্রামের ভেতর রয়েছে চামঢাকির মন্দির এবং রাস্তার ধারে অনেক আগের তেঁতুল গাছের পার্শ্বে রয়েছে কালি মন্দির ও বট গাছের পার্শ্বে শিব মন্দির। জৈষ্ঠের দ্বিতীয় বুধবার উপলক্ষে এখানে দেড় দিনব্যাপী চামঢাকির মেলা বসে। ১ম দিন বুধবার ৩ টার পর থেকে মেলা শুরু হয়। এই দিনে নারীদের চেয়ে পুরুষের উপস্থিতি বেশি হয় এবং পরের দিন সকালে নারীদের উপস্থিতি বেশি হওয়ায় ঐদিনের মেলাকে অনেকেই বৌ মেলা বলে থাকে।বিনাইল ইউনিয়ন ছাড়াও ১৫ থেকে ১৬ টি গ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে নারী-পুরুষরা বিনাইল ইউনিয়নের পুইনন্দা চামঢাকির মেলায় আসে।

এই মেলাটি সফল করার লক্ষ্যে বিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খায়রুল আলম রাজু, বিনাইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাদশা, বিরামপুর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শ্রী শান্ত কুমার কুন্ডুসহ সংশ্লীষ্ট সকলে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করেন।

মেলায় জিলাপি ও মিষ্টির দোকান নিয়ে আসা বিরামপুর মুকুন্দপুর ইউনিয়নের চকদূরগা গ্রামের মৃত তোফায়েল উদ্দিনের ছেলে আজিম উদ্দিন(৬৫) জানান প্রায় ৪০ বছর ধরে এই মেলায় বাবার সাথে দোকান নিয়ে আসেন। মেলায় যেমন লোকজনের সমাগম ঘটে তেমন বেচাকেনা হয়।

বিনাইল পুইনন্দা মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি শ্রী কন্নক বর্মন জানিয়েছেন,মেলাটি ৪ একর জমির উপর প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ টি দোকান নিয়ে বসে আছে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা দোকানিরা। জানাযায় একদিন আগে থেকেই দোকানিরা এসে দোকানের জায়গা নির্ধারণ করে থাকে। মধু মাস হিসেবে নানান রকম ফলের দোকান, কসমেটিক, খেলনা, কাঠের তৈরি খেলনা সামগ্রী, মিষ্টি,দই, জিলাপি, ফুচকা চটপটি মাখা, আচার,পানসিগারেট, কাপড়সহ হরেক রকমের দোকান মেলায় লক্ষ্য করা যায়।

তিনি আরো জানান যে, আমরা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়,নির্যাতনের ভয়ে প্রতিবাদ করতে পারিনা। মন্দিরের নিজস্ব জমি যুগ যুগ ধরে দখল করে ভোগ করে আসছে এলাকার কিছু প্রভাবশালী ব্যাক্তীরা।আমরা এই জমিগুলো উদ্ধার ও কালি মন্দির সংস্কারের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

এ বিষয়ে মুঠোফোনে বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পরিমল কুমার সরকারের সাথে কথা বললে তিনি জানান, লিখিত ভাবে অভিযোগটি আসলে তিনি বিষয়টি দেখবেন।