ঢাকা ১১:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘যৌন নিপীড়ক’ শিক্ষকসহ বিভাগীয় প্রধানের বহিষ্কারের দাবি

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:০৯:০১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ মার্চ ২০২৪
  • / ৩২১ বার পড়া হয়েছে

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিঃ

ছাত্রীদের ডাকেন বাসায়, পাঠান অশ্লীল বার্তা, আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও, একান্তে কাটাতে চান সময়, গভীর রাতে ডাকেন চা খাওয়ার জন্য, দেখা করতে বলেন শাড়ি পরে, মেয়েদের ইনবক্সে চেয়ে বেড়ান ছবি, ঘুরতে চান রিকশায়, ক্যাম্পাসের বাইরের রেস্টুরেন্টে যাওয়ার জন্য জানান নিমন্ত্রণ, কৌশলে দেন অনৈতিক প্রস্তাব।

এমনই এক ‘যৌন নিপীড়ক’ শিক্ষকের আবির্ভাব ঘটেছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজন সাহা। ২০১৯ সালে বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পর থেকেই ’যৌন নিপীড়নের ’মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

শুধু তাই নয় অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হলেই শুরু করেন একাডেমিক হয়রানি। ক্লাসে অনুপস্থিত দেখিয়ে পরীক্ষায় জরিমানা, খাতায় নম্বর কম দেওয়া, থিসিস পেপার আটকে দেওয়াসহ নানা ধরনের ভোগান্তির শিকার হতে হয় শিক্ষার্থীদের।

আর সাজন সাহার এসকল কর্মকাণ্ড বিভাগটির বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদ শুভ্রকে জানানোর পরও নেওয়া হয়নি কোনো ধরণের ব্যবস্থা। উল্টো বিষয়টি গোপন রেখে বিভাগের অন্য দুইজন শিক্ষককে ফাঁসানোর প্রস্তাব দেন শুভ্র। প্রস্তাবে রাজি হলে দেওয়া হয় ভালো ফলাফলের নিশ্চয়তা।

এই ঘটনায় ‘যৌন নিপীড়ক’ শিক্ষক সাজন সাহা এবং বিভাগটির বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদ শুভ্রকে বহিষ্কারের দাবিতে উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সৈয়দা সানজানা আহসান ছোঁয়া।

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) দুপুরে বিভাগের সহপাঠীদের সাথে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ছোঁয়া।

লিখিত অভিযোগে ছোঁয়া বলেন, ‘মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজন সাহা আমাকে প্রায়ই মেসেজ দিতেন। ২০১৯ সাল থেকে যখন আমি ভার্সিটিতে প্রথম প্রবেশ করি। একপর্যায়ে তিনি আমার সাথে বিভিন্ন ধরণের অসুলভ আচরণ করা শুরু করেন এবং আমার সাথে বিভাগের বাইরে নানাভাবে সম্পর্ক তৈরির চেষ্টা করেন, যা আমি প্রশ্রয় দিতে নারাজ হই। এই কারণে উনি আমাকে বিভিন্নভাবে মানসিক এবং শারীরিক হয়রানির সম্মুখীন করেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘তার এই আচরণ মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদ শুদ্র স্যারকে আমি যখন জানাই। উনি কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে বিষয়টা আমাকে গোপন রাখার অনুরোধ করেন এবং উনিও পরবর্তীতে আমাকে মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেন। আমার শারীরিক ও মানসিক অবস্থা ভালো নেই। উনি আরও বড় যে ভুলটা করেন সেটা হলো অন্য শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেওয়ার জন্য আমাকে রেজাল্টের লোভ দেখানোর চেষ্টা। আমি যখন সাজন সাহার হয়রানির বিষয়টি ফেসবুকে প্রকাশ করি তখন উনি আমাকে ফোন দিয়ে হুমকি দেন এবং সব জায়গায় ভুল তথ্য দিয়ে নিজেদের দোষ ঢাকার চেষ্টা চালিয়ে যান। সাজন সাহা এবং রেজুয়ান আহমেদ শুভ্র স্যার দুজনই এক হয়ে আমার অসহায় অবস্থার সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করেন।’

এব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক সাজন সাহার বক্তব্য জানতে তাকে একাধিকবার কল দিলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এবিষয়ে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদ শুভ্র বলেন, আমার কাছে এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি। আমি মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে সাথে সাথেই প্রতিকারের ব্যবস্থা নিয়েছি। সাজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ শোনার পর একাডেমিক কাউন্সিল মিটিং করে আমি নিজেই দায়িত্ব নিয়ে তার ইন্টার্নিশিপ রিপোর্ট শেষ করে দিয়েছি। অন্যায়কারী যেই হোক সে অন্যায়কারী। আমি ও আমার বিভাগের সকল শিক্ষকই চাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইন অনুযায়ী তার বিচার হোক। কিন্তু অন্যায়কারীর সাথে অন্য কাউকে জড়ানো উচিত নয়। আমার বিরুদ্ধে হুমকি ধামকির যে অভিযোগ আনা হয়েছে এগুলোর প্রমাণ থাকলে আমাকে দিতে বলবেন দয়া করে। অনুমতি ছাড়া কল রেকর্ড করা অপরাধ। সে অনুমতি ছাড়া আমার অনেক কিছুই রেকর্ড করেছে। তারপরেও যদি তার কাছে হুমকির প্রমাণ থাকে, সে প্রমাণ দেক। আমার পক্ষ থেকে কোনো রকম হুমকি দেওয়া হয়নি।

অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, আমরা যে অভিযোগটি পেয়েছি, তা শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীর। এ ধরনের ঘটনায় আমরা বিব্রত। আজকে অভিযোগকারী ২ জন ছাত্রী স্বশরীরে আমার সাথে সাক্ষাৎ করে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। সাথে তাদের অভিভাবকও ছিলেন। বিষয়টি তদন্তের জন্য এরমধ্যে যৌন নিপীড়ন সেলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা করানোর পাশাপাশি নিরাপত্তা নিশ্চিতের দায়িত্বও আমাদের। অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইন অনুযায়ী চরম শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা করানোর পাশাপাশি নিরাপত্তা নিশ্চিতের দায়িত্বও আমাদের।

উল্লেখ্য, এর আগে রোববার (৩ মার্চ) সাজন সাহার অনৈতিক প্রস্তাবের মেসেজের একাধিক স্কিনশর্ট JKKNIU-TSC গ্রুপ, JKKNIU গ্রুপসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেন ছোঁয়া। পোস্টের ক্যাপশনে তুলে ধরেন শিক্ষাজীবনে শিক্ষক দ্বারা দীর্ঘ সময় ধরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের চিত্র।

পরে ধীরে ধীরে অন্য ভুক্তভোগীরাও সাজন সাহার কুপ্রস্তাবের স্কিনশর্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করতে থাকেন। রাত না পেরোতেই একের পর এক বেরিয়ে আসতে থাকে সাজন সাহার কু-কীর্তি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছেয়ে যায় সাজন সাহার অনৈতিক কর্মকাণ্ডে।

পরদিন রাত পেরিয়ে ভোরের আলো পৌঁছাতেই গণ আন্দোলনে রুপ নেয় সাজন সাহার কর্মকাণ্ড। তাদের সহপাঠীরা প্রশাসনিক ভবনের কেচিগেট আটকিয়ে ৬ দফা দাবিতে আন্দোলনে নামেন। ৬ দফা দাবিগুলো হলো- অভিযুক্ত শিক্ষক সাজন সাহাকে স্থায়ীভাবে চাকুরি হতে অপসারণ বা চাকরিচ্যুত করতে হবে, অপরাধের সাথে জড়িত সকলকে বিচারের আওতায় আনতে হবে, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী এবং সহপাঠী সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, ২০১৮-১৯ সেশনের (মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা) বিবিএ-এর ফলাফল অনতিবিলম্বে প্রকাশ করতে হবে, ভবিষ্যতে একাডেমিক কার্যক্রমে এবং শিক্ষার্থীদের ওপরে যেন কোনো বিরূপ প্রভাব না পড়ে তা নিশ্চিত করতে হবে, দফাগুলো আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বাস্তবায়ন করতে হবে। পরে উপাচার্য তাদের ডেকে নিয়ে বিচারের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

‘যৌন নিপীড়ক’ শিক্ষকসহ বিভাগীয় প্রধানের বহিষ্কারের দাবি

আপডেট সময় : ০১:০৯:০১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ মার্চ ২০২৪

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিঃ

ছাত্রীদের ডাকেন বাসায়, পাঠান অশ্লীল বার্তা, আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও, একান্তে কাটাতে চান সময়, গভীর রাতে ডাকেন চা খাওয়ার জন্য, দেখা করতে বলেন শাড়ি পরে, মেয়েদের ইনবক্সে চেয়ে বেড়ান ছবি, ঘুরতে চান রিকশায়, ক্যাম্পাসের বাইরের রেস্টুরেন্টে যাওয়ার জন্য জানান নিমন্ত্রণ, কৌশলে দেন অনৈতিক প্রস্তাব।

এমনই এক ‘যৌন নিপীড়ক’ শিক্ষকের আবির্ভাব ঘটেছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজন সাহা। ২০১৯ সালে বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পর থেকেই ’যৌন নিপীড়নের ’মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

শুধু তাই নয় অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হলেই শুরু করেন একাডেমিক হয়রানি। ক্লাসে অনুপস্থিত দেখিয়ে পরীক্ষায় জরিমানা, খাতায় নম্বর কম দেওয়া, থিসিস পেপার আটকে দেওয়াসহ নানা ধরনের ভোগান্তির শিকার হতে হয় শিক্ষার্থীদের।

আর সাজন সাহার এসকল কর্মকাণ্ড বিভাগটির বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদ শুভ্রকে জানানোর পরও নেওয়া হয়নি কোনো ধরণের ব্যবস্থা। উল্টো বিষয়টি গোপন রেখে বিভাগের অন্য দুইজন শিক্ষককে ফাঁসানোর প্রস্তাব দেন শুভ্র। প্রস্তাবে রাজি হলে দেওয়া হয় ভালো ফলাফলের নিশ্চয়তা।

এই ঘটনায় ‘যৌন নিপীড়ক’ শিক্ষক সাজন সাহা এবং বিভাগটির বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদ শুভ্রকে বহিষ্কারের দাবিতে উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সৈয়দা সানজানা আহসান ছোঁয়া।

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) দুপুরে বিভাগের সহপাঠীদের সাথে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ছোঁয়া।

লিখিত অভিযোগে ছোঁয়া বলেন, ‘মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজন সাহা আমাকে প্রায়ই মেসেজ দিতেন। ২০১৯ সাল থেকে যখন আমি ভার্সিটিতে প্রথম প্রবেশ করি। একপর্যায়ে তিনি আমার সাথে বিভিন্ন ধরণের অসুলভ আচরণ করা শুরু করেন এবং আমার সাথে বিভাগের বাইরে নানাভাবে সম্পর্ক তৈরির চেষ্টা করেন, যা আমি প্রশ্রয় দিতে নারাজ হই। এই কারণে উনি আমাকে বিভিন্নভাবে মানসিক এবং শারীরিক হয়রানির সম্মুখীন করেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘তার এই আচরণ মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদ শুদ্র স্যারকে আমি যখন জানাই। উনি কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে বিষয়টা আমাকে গোপন রাখার অনুরোধ করেন এবং উনিও পরবর্তীতে আমাকে মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেন। আমার শারীরিক ও মানসিক অবস্থা ভালো নেই। উনি আরও বড় যে ভুলটা করেন সেটা হলো অন্য শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেওয়ার জন্য আমাকে রেজাল্টের লোভ দেখানোর চেষ্টা। আমি যখন সাজন সাহার হয়রানির বিষয়টি ফেসবুকে প্রকাশ করি তখন উনি আমাকে ফোন দিয়ে হুমকি দেন এবং সব জায়গায় ভুল তথ্য দিয়ে নিজেদের দোষ ঢাকার চেষ্টা চালিয়ে যান। সাজন সাহা এবং রেজুয়ান আহমেদ শুভ্র স্যার দুজনই এক হয়ে আমার অসহায় অবস্থার সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করেন।’

এব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক সাজন সাহার বক্তব্য জানতে তাকে একাধিকবার কল দিলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এবিষয়ে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদ শুভ্র বলেন, আমার কাছে এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি। আমি মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে সাথে সাথেই প্রতিকারের ব্যবস্থা নিয়েছি। সাজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ শোনার পর একাডেমিক কাউন্সিল মিটিং করে আমি নিজেই দায়িত্ব নিয়ে তার ইন্টার্নিশিপ রিপোর্ট শেষ করে দিয়েছি। অন্যায়কারী যেই হোক সে অন্যায়কারী। আমি ও আমার বিভাগের সকল শিক্ষকই চাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইন অনুযায়ী তার বিচার হোক। কিন্তু অন্যায়কারীর সাথে অন্য কাউকে জড়ানো উচিত নয়। আমার বিরুদ্ধে হুমকি ধামকির যে অভিযোগ আনা হয়েছে এগুলোর প্রমাণ থাকলে আমাকে দিতে বলবেন দয়া করে। অনুমতি ছাড়া কল রেকর্ড করা অপরাধ। সে অনুমতি ছাড়া আমার অনেক কিছুই রেকর্ড করেছে। তারপরেও যদি তার কাছে হুমকির প্রমাণ থাকে, সে প্রমাণ দেক। আমার পক্ষ থেকে কোনো রকম হুমকি দেওয়া হয়নি।

অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, আমরা যে অভিযোগটি পেয়েছি, তা শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীর। এ ধরনের ঘটনায় আমরা বিব্রত। আজকে অভিযোগকারী ২ জন ছাত্রী স্বশরীরে আমার সাথে সাক্ষাৎ করে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। সাথে তাদের অভিভাবকও ছিলেন। বিষয়টি তদন্তের জন্য এরমধ্যে যৌন নিপীড়ন সেলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা করানোর পাশাপাশি নিরাপত্তা নিশ্চিতের দায়িত্বও আমাদের। অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইন অনুযায়ী চরম শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা করানোর পাশাপাশি নিরাপত্তা নিশ্চিতের দায়িত্বও আমাদের।

উল্লেখ্য, এর আগে রোববার (৩ মার্চ) সাজন সাহার অনৈতিক প্রস্তাবের মেসেজের একাধিক স্কিনশর্ট JKKNIU-TSC গ্রুপ, JKKNIU গ্রুপসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেন ছোঁয়া। পোস্টের ক্যাপশনে তুলে ধরেন শিক্ষাজীবনে শিক্ষক দ্বারা দীর্ঘ সময় ধরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের চিত্র।

পরে ধীরে ধীরে অন্য ভুক্তভোগীরাও সাজন সাহার কুপ্রস্তাবের স্কিনশর্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করতে থাকেন। রাত না পেরোতেই একের পর এক বেরিয়ে আসতে থাকে সাজন সাহার কু-কীর্তি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছেয়ে যায় সাজন সাহার অনৈতিক কর্মকাণ্ডে।

পরদিন রাত পেরিয়ে ভোরের আলো পৌঁছাতেই গণ আন্দোলনে রুপ নেয় সাজন সাহার কর্মকাণ্ড। তাদের সহপাঠীরা প্রশাসনিক ভবনের কেচিগেট আটকিয়ে ৬ দফা দাবিতে আন্দোলনে নামেন। ৬ দফা দাবিগুলো হলো- অভিযুক্ত শিক্ষক সাজন সাহাকে স্থায়ীভাবে চাকুরি হতে অপসারণ বা চাকরিচ্যুত করতে হবে, অপরাধের সাথে জড়িত সকলকে বিচারের আওতায় আনতে হবে, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী এবং সহপাঠী সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, ২০১৮-১৯ সেশনের (মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা) বিবিএ-এর ফলাফল অনতিবিলম্বে প্রকাশ করতে হবে, ভবিষ্যতে একাডেমিক কার্যক্রমে এবং শিক্ষার্থীদের ওপরে যেন কোনো বিরূপ প্রভাব না পড়ে তা নিশ্চিত করতে হবে, দফাগুলো আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বাস্তবায়ন করতে হবে। পরে উপাচার্য তাদের ডেকে নিয়ে বিচারের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত করেন।