শেষ মুহুর্তে জমে উঠেছে হিলি’র গরু ছাগলের হাট
- আপডেট সময় : ০৯:২০:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ জুন ২০২৩
- / ৪৪২ বার পড়া হয়েছে
মোঃ রাকিব হাসান ডালিম, হাকিমপুর (হিলি) প্রতিনিধিঃ
আর মাত্র তিন দিন পরে মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। প্রতিবছরের ন্যায় এবারো কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে শেষ মহূর্তে জমে উঠেছে দিনাজপুরের হিলি সীমান্তে কোরবানির গরু-ছাগলের অস্থায়ী হাট। এবারের হাটে ভারতীয় গরু দেখা যায়নি তাই দেশীয় কোরবানির পশুর দাম অনেকটা স্বাভাবিক থাকায় খুশি ক্রেতারা।
হাটা আসা পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য কাজ করতে দেখা গেছে ভেটেরিনারি মেডিকেল টিমকে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে হাটে থানার এসআই আনিসুর রহমান ও পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি দেখা গেছে।
অন্যদিকে কোরবানি পশু জবাই এর পরে চামড়া সংরক্ষণের জন্য লবণ ব্যবহার নিশ্চিত করতে পশু ক্রেতাদের হাট ইজারা কমিটির পক্ষ থেকে লবণ ফ্রী দেওয়া হয়েছে। সেই সাথে বৃহস্পতিবার ঈদুল আযহা হওয়ায় আগামী বুধবার কোরবানি পশুর শেষ হাট বসবে বলে কমিটি মাইকে ঘোষণা দিয়েছেন। শেষ দিনের হাটে পশু বহনকারী ভটভটিতে দশটি কোরবানি পশু হাটে নিয়ে আসলে ভটভটি মালিককে হাট কমিটির পক্ষ থেকে পাঁচ শত টাকা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর হিলিতে কোরবানির জন্য পশু প্রস্তুত রয়েছে ১৫ হাজার ৭৩৭টি। চাহিদা রয়েছে ১৪ হাজার ২২টি পশুর।
বাংলাহিলি পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজে মাঠে কোরবানির ঈদ উপলক্ষে সপ্তাহে দুইদিন রোববার ও বৃহস্পতিবার অস্থায়ীভাবে বসছে পশুর হাট। অন্য বারের চেয়ে এবার হাটের চিত্র আলাদা। সকাল থেকে স্কুল মাঠে ভারত সীমান্তবর্তী বিভিন্ন এলাকা থেকে গরু ছাগল বিক্রি করতে আসছেন গৃহস্থরা। দুপুরের পরে বাড়ে ক্রেতাদের সমাগমও। হাটে বিভিন্ন রঙের, বিভিন্ন আকারের গরু-ছাগল চোখে পড়ে। হাটে এবার দেশি জাতের গরু-ছাগলের প্রাধান্য সবচেয়ে বেশি।
এই অস্থায়ী কোরবানির হাটে প্রায় পশুর দাম নাগালের মধ্যে রয়েছে। ৪০ হাজার টাকা থেকে আড়াই লাখ টাকার গরু রয়েছে হাটে। ক্রেতারা তাদের সমর্থ অনুযায়ী কোরবানির পশু কিনতে পারছেন।
হিলি হাটে কোরবানি পশু কিনতে আসা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ঈদ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার আজ সাপ্তাহিক হাটের দিন। বৃহস্পতিবার ঈদ হওয়ায় মাঝখানে আগামী বুধবার ঈদের আগের দিন আর একদিন হাট বসবে। আজকে হাটে গরু কিনতে এসেছি। হাটে পর্যাপ্ত গরু আমদানি হয়েছে। দামও তেমন বেশি না, নাগালের মধ্যে। ৮৫ হাজার টাকা দিয়ে আমরা একটা বড় গরু কিনলাম। আর একটি ছাগল কিনেছি দশ হাজার টাকা দিয়ে। গরুর ছাপা (খাজনা) ৬০০ টাকা ও ছাগলের ৩৭০ টাকা।
হাটে গরু কিনতে আসা আশরাফুল ইসলাম বলেন, হিলি’র হাটে প্রতি বছর গরুর দাম মোটামুটি নাগালের মধ্যে থাকে। তাই গরু কিনতে এসে ছলাম। আমরা সাত ভাগে ১ লাখ সাড়ে সাত হাজার টাকা দিয়ে দেশী আড়িয়া গরু কিনলাম। চামড়া সংরক্ষণের জন্য হাট ইজারা কমিটির পক্ষ থেকে লবণ ফ্রী দিয়েছে।
হাটে গরু বিক্রেতা হারুন উর রশিদ বলেন, আমি চারটি গরু নিয়ে আসছিলাম সব গরু বিক্রি করেছি। প্রায় সাড়ে তিন মণ লোটের দেশী আড়িয়া গরু ১ লাখ সাড়ে সাত হাজার টাকা দিয়ে বিক্রি করলাম।
আর একজন বিক্রেতা দুলাল হোসেন বলেন, আমার এই গরুটি দেশীয় সাঁড়। অনেক আদর যত্ন করে বড় করেছি। আড়াই লাখ টাকা দাম রেখেছি। ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা দাম অনেকেই বলছেন। আমি আমার গরু দুই লাখের নিচে বিক্রি করবো না।
বিক্রেতা সবিরুল ইসলাম বলেন, আমার এই আড়িয়া গরুটির দাম চাচ্ছি এক লাখ দশ হাজার টাকা। কাস্টমার ৯০ থেকে ৯৩ হাজার টাকা দাম বলছেন। এক লাখ এর নিচে বিক্রি করবো না।
হিলি অস্থায়ী কোরবানি পশু হাটের ইজারাদার অনিক সরকার বলেন, জমজমাট হয়ে উঠেছে হিলির অস্থায়ী গরু ছাগলের হাট। হাটে কোরবানি পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অস্থায়ী মেডিকেল টিম রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ সদস্যরা সার্বক্ষণিক তৎপর রয়েছেন। কোরবানি পশুর চামড়া সংরক্ষণে পশু ক্রয়ের চালান দেখে হাট কমিটির পক্ষ থেকে লবণ ফ্রী দেওয়া হচ্ছে ক্রেতাদের। আগমনী বুধবার হাটে দশটি পশু হাটে নিয়ে আসলে ভটভটি মালিককে ৫’শ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি গরুর খাজনা (চালান) ৬০০ টাকা ও ছাগল ৩৭০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
হাকিমপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডা.মোছাঃ নাছরিন খাতুন বলেন, আমাদের হাকিমপুর (হিলি) উপজেলায় মোট গরু, মহিষ ও ছাগলের খামার রয়েছে ৩ হাজার ২৩৯টি। ঈদ উপলক্ষে ১৫ হাজার ৭৩৭ টি কোরবানির পশু প্রস্তুত রয়েছে। তার মধ্যে চাহিদা আছে ১৪ হাজার ২২টি। চাহিদা ছাড়াও অতিরিক্ত রয়েছে ১ হাজার ৭১৫টি কোরবানির পশু। সপ্তাহে দুইদিন রোববার ও বৃহস্পতিবার অস্থায়ী ভাবে হিলি পাইলট স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে কোরবানির পশুর হাট বসছে। সেখানে আমাদের ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম রয়েছে। তারা কোরবানি পশুর স্বাস্থ্য সেবা ও বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা